৫০ কোটি বছরের পুরনো এক আনুবীক্ষণিক প্রাণীর জীবাশ্ম আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা। আশ্চর্যের বিষয়, প্রাণীটির কোনও মলদ্বার ছিল না!
২০১৭-য় জীবাশ্মটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়। তখন বলা হয়েছিল, একটা ছোট থলির মতো এই সামুদ্রিক প্রাণীটি সব মেরুদণ্ডী প্রাণীর প্রাচীনতম পূর্বসূরী হতে পারে। এর আকার মাত্র ১ মিলিমিটার। নাম স্যাকোরাইটাস করোনারিয়াস। যাকে তখন বিজ্ঞানীর মেরুদণ্ডী প্রাণীদের পূর্বসূরীদের তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করেছিলেন।
সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণায় বলা হচ্ছে, স্যাকোরাইটাস সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতির প্রাণীদের পূর্বসূরী। চীন এবং যুক্তরাজ্যের গবেষকদের একটি দল প্রাণীটির ওপর বিশদভাবে গবেষণা করে জানিয়েছে যে, এই প্রাণী একডাইসোজোয়ান গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। মানে এটি মাকড়সা-সহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের পূর্বপুরুষ। এই বিবর্তনগত বিভ্রান্তির একটি কারণ ছিল প্রাণীটির মলদ্বার না থাকা।
ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এমিলি কার্লাইল স্যাকোরাইটাস নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন। বিবিসি রেডিও ফোর এর ‘ইনসাইড সায়েন্স’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন: “এটি কিছুটা বিভ্রান্তিকর। বেশিরভাগ একডাইসোজোয়ান প্রাণীর মলদ্বার আছে। তাহলে এটির কেন ছিল না? একটি সম্ভাব্য বিকল্প হচ্ছে, এই পুরো গোষ্ঠীর পূর্বপুরুষদের মলদ্বার ছিল না। পরে স্যাকোরিটাস হয়তো তার থেকেই বিবর্তিত হয়েছিল।” এমিলি আরও বলেছেন, “হতে পারে যে এটি নিজস্ব বিবর্তনের সময় ধীরে ধীরে মলদ্বার হারিয়ে ফেলেছে। থলের মত দেখতে প্রাণীটি একটি জায়গায় স্থির হয়ে বসে থাকতো আর খাওয়াসহ সব কাজের জন্য তার একটিই দ্বার খোলা থাকত।”
স্যাকোরাইটাস সমুদ্রে বাস করত। নরম থলের মতো শরীর হলেও মেরুদণ্ড একে সাগরতলের পলিমাটিতে এক জায়গায় শক্ত করে ধরে রাখত। গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, এর আশেপাশে থাকত অনেক প্রাণী যার কিছু ছিল পরবর্তী যুগেও জীবিত থাকা জীবের মতো দেখতে। তবে অনেকগুলো আবার সম্পূর্ণ অচেনা। ক্যামব্রিয়ান যুগের ওই জীবাশ্ম ধারণকারী শিলাগুলো নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে।