গোটা শরীর থেকে ছিন্ন হয়ে গেছে মাথা। কিন্তু মরেনি প্রাণীটি। মাথা থেকেই ক্রমে গোটা শরীর গঠন হয়ে যাচ্ছে! শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও মাত্র ২২ দিনে এমনটাই ঘটাতে পারে সামুদ্রিক স্লাগ। খুবই আকস্মিক ভাবে এই তথ্য আবিস্কার করেছেন জাপানের নারা মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়-এর দুজন ইকোলজিস্ট সায়াকা মিথো ও ইওচি ইয়ুসা। মিথো একদিন তাঁর ল্যাবে দেখেন এক স্লাগকে যার দেহ মাথা থেকে বিচ্ছিন্ন, অথচ সেই মাথা হামাগুড়ি দিচ্ছে। দেখা গেছে স্লাগ, কোপেপড নামের একধরণের চিংড়ি বা কাঁকড়ার মতো কিন্তু খুবই ক্ষুদ্র সামুদ্রিক পরজীবি দ্বারা আক্রান্ত হয়। এদের হাত থেকে বাঁচতেই স্লাগ তার মাথা বাকি দেহ থেকে আলাদা করে ফেলে। তারপর মাথা হামাগুড়ি দিতে দিতে শ্যাওলা খুঁটে খুঁটে খেতে খেতেই মাত্র ২২ দিনেই সম্পূর্ণ দেহ পুনর্গঠন করে ফেলে।
কীভাবে পুনর্গঠিত হয় স্লাগের দেহ? শ্যাওলার মধ্যে থাকে সূর্যালোকিত শক্তি যাকে বলে ক্লোরোপ্লাস্ট। খুবই কম বয়সী দেহহীন স্লাগ শ্যাওলার কোষের দেওয়ালে ফুটো করে ক্লোরোপ্লাস্ট সংগ্রহ করে শ্যাওলা থেকে।
ইয়ুসা জানান, সামুদ্রিক কোনো প্রাণীর সম্পূর্ণ দেহ পুনর্গঠনের তথ্য এই প্রথম সামনে এল। এর আগে ‘ফ্লাটওয়ার্ম’ বা ‘সি স্টার’ এর মতো প্রাণী যে দেহের একাংশ থেকে অথবা কাটা হাত থেকে গোটা দেহ গঠন করতে পারে তা জানা থাকলেও সেক্ষেত্রে আসলে আভ্যন্তরীণ কোনো একটি দেহাংশ গঠনে খামতি থাকত। স্লাগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো খামতি নেই।