খুদে কুমিরের রহস্য

খুদে কুমিরের রহস্য

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩১ আগষ্ট, ২০২২

বিরল প্রজাতির এক খুদে কুমিরের বাস ছিল উত্তর-পশ্চিম কুইন্সল্যান্ডে। সেটা আজ থেকে মোটামুটি সাড়ে তেরো মিলিয়ন বছর আগে। অস্ট্রেলিয়ার আদিম এই বামন কুমিরমশাইকে নিয়ে আরও অনেক নতুন কথা শোনালেন কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

ট্রিলোফসুকাস রাকামি, ছোট কুমিরের বড়ো ল্যাটিন নাম। স্টেট অফ দ্য আর্ট নামের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই নয়া আবিষ্কৃত প্রজাতির কঙ্কালের অজানা খবর দিচ্ছেন ওদেশের বিজ্ঞানীরা। পিএইচডির ছাত্র জার্গো রিস্টেভস্কির মতে, বিলুপ্ত এই কুমিরের মাথার খুলি নিয়ে সবচেয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিক্ষা নাকি হয়েছে। সুন্দরভাবে সংরক্ষিত ঐ খুলিটার মাইক্রো সিটি স্ক্যানের পর আলাদা আলাদা করে হাড়গুলোকেও শনাক্ত করা গেছে কম্পিউটারের পর্দায়, রিস্টেভস্কি আরও জানিয়েছেন। আন্দাজ ৭০ থেকে ৯০ সেন্টিমিটারের এই ছানা কুমিরের ওজন ছিল এক বা দু কেজি। আজকের দিনে সচরাচর এর চেয়ে অনেক বড়ো আকারের কুমির আমরা দেখতে অভ্যস্ত।

একটা ছোট শুঁড় আর মাথার ওপর তিন তিনটে কুঁজ – সত্যিই কিম্ভূত এই কুমির। আশ্চর্য এই প্রজাতির ল্যাটিন নামটাও তাৎপর্যের। ১৯৯৩ সালে অ্যালান রাকামের সম্মানে প্রাণীটার নামকরণ হয়েছিল – মানে হল রাকামের তিন-চুড়ো কুমির। অ্যালান মহাশয় এখন মাউন্ট ইশায়, নিযুক্ত আছেন রিভারস্লে ফসিল ডিসকভারি সেন্টারের তত্ত্বাবধানে।

রিস্টেভস্কি এই গবেষণার আরও মূল্যবান খবরাখবর দেন। আফ্রিকা আর দক্ষিণ আমেরিকার অধুনালুপ্ত কিছু কুমির প্রজাতির সাথে এই রাকামি কুমিরের খুলির গঠনের মিল আছে। দূর সম্পর্কের এই আত্মীয়তা খুঁজে পেয়ে নাকি বিজ্ঞানীরা অবাক হয়েছেন। এতদিন মনে করা হত বিবর্তনের রাস্তায় এখনকার দিনের কুমিরের সাথেই বেশি মিল ছিল এই খুদে কুমিরের। যদিও এখন গবেষকরা মনে করছেন, ডাঙাতেই হয়তো বেশি সময় কাটিয়েছে ট্রিলোফসুকাস রাকামি। অসাধারণ বৈচিত্র্য ছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রাগৈতিহাসিক কুমির প্রজাতির, কিছুদিন আগে এমনই আশার কথা জানিয়েছিলেন সহকারী অধ্যাপক স্টিভ সালিসবারি। মজার দেখতে ঐ সব কুমিরের মধ্যে রাকামি সত্যিই আনোখা। কুইন্সল্যান্ডের উত্তরে যদি ১৩ লক্ষ বছর আগে ঘুরতে যাওয়া যায়, অধ্যাপক সালিসবারি বলছেন, তাহলে হয়তো জলের ধারে নয়, জঙ্গলের ভেতরেই কুমিরদের দেখা বেশি পাওয়া যেত।

 

তথ্যসূত্রঃ কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়