ডাউন সিনড্রোমে আশার আলো: নতুন থেরাপির খোঁজ

ডাউন সিনড্রোমে আশার আলো: নতুন থেরাপির খোঁজ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

৮০০ নবজাতকের মধ্যে গড়ে একজন ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এই রোগ ট্রাইসোমি-২১ নামেও প্রচলিত। গোনাডোট্রোপিন নিঃসরণে সহায়ক হরমোন ইঞ্জেকশানের মাধ্যমে রোগীদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ চাঙ্গা করা যায়। কিন্তু কতটা সফল এই থেরাপি? ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত অল্প কয়েকজন ব্যক্তিকে নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়েছেন। এই চিকিৎসা পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত নাম GnRH ইঞ্জেকশান থেরাপি।

ল্যিল আর লোসেন ইউনিভার্সিটি হসপিটালের যৌথ উদ্যোগে এবং মূলত ল্যিলের নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড কগনিশান ল্যাবরেটরির গবেষক দল পরীক্ষাটা চালিয়েছিলেন। ছিলেন ডাউন সিনড্রোমের সাতজন রোগী। প্রথমে ইঁদুরের শরীরে এই রোগের লক্ষণগুলো খতিয়ে দেখা হয়। ধরা পড়ে, গোনাডোট্রোপিন হরমোন ঠিকঠাক কাজ করছে না মোটেই আর তা থেকেই মস্তিষ্কের এই অস্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ। তারপর ঐ সাত রোগীর উপরে GnRH ইঞ্জেকশান থেরাপি প্রয়োগ করে দেখা যাচ্ছে ফলাফল বেশ আশাপ্রদ। থেরাপির পরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের ভেতরকার সংযোগ ও কাজকম্ম আগের চেয়ে সচল হয়েছে। এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হল সায়েন্স পত্রিকায়।

ডাউন সিনড্রোম কোনও অতিবিরল রোগ নয়। চিকিৎসার বিভিন্ন পরিক্ষায় দেখা গেছে এই রোগে মানুষের স্বাভাবিক চিন্তা করার ক্ষমতা অনেকটাই কমে যেতে থাকে বয়সের সাথে সাথে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শতকরা ৭৭ জনেরই আলঝেইমার্স রোগের লক্ষণগুলোই ধরা পড়ে। এর সাথে সাথে ঘ্রাণশক্তি কমতে থাকে, এমনকি স্বাভাবিক যৌন ক্ষমতাতে ঘাটতিও থেকে যায় রোগীদের।

গোনাডোট্রোপিন নিঃসারক হরমোন প্রজনন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে হাইপোথ্যালামাসের দ্বারা। কিন্তু যে নিউরোনগুলো এই বিশেষ হরমোনের কাজ করার নেপথ্যে থাকে তারা মগজের অন্য অংশেও অন্য কাজে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। যেমন – স্বাভাবিক চিন্তাশক্তি। ২১ নম্বর ক্রোমোজোমে গড়বড় থাকলে এই হরমোনও ভোল পাল্টায়। আর তাতেই ডাউন সিনড্রোমের মতো রোগের জন্ম। গবেষণার মুখ্য অধিকর্তা ভিন্সেন্ট প্রেভো এমনই জানিয়েছেন।