স্যালামান্ডারের চোখ দিয়ে দেখা সময়ের অভিমুখ

স্যালামান্ডারের চোখ দিয়ে দেখা সময়ের অভিমুখ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সময় কেন সামনের দিকেই ছোটে? সময়ের এই নির্দিষ্ট অভিমুখ একটা রহস্য বটে, অ্যারো অফ টাইম বলা হয়। অ্যামেরিকার সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্কের এক নতুন গবেষণায় হয়তো খানিক সদুত্তর মিলবে।

স্যালামান্ডার একপ্রকারের উভচর প্রাণী। আণুবীক্ষণিক পর্যায়ে তাদের রেটিনা বিশ্লেষণ করে সময়ের দিক বুঝতে চেয়েছেন গবেষকরা। যা সাধারণত আমাদের খালি চোখে ধরা পড়ে না। মানুষেরই মস্তিষ্কে সময়ের ধারণা লুকিয়ে, সেই জমাট ধারণাই ভেঙে টুকরো হয়ে সেকেন্ড মিনিট বা ঘণ্টায় প্রতিফলিত হয় – এমন মতামত কিছু বিজ্ঞানীর। আবার অনেকের মতে, চতুর্থ মাত্রার কাজ করে সময়।

অতীত আর ভবিষ্যতের ফারাক এত স্পষ্ট কেন আমাদের মনে? টেবিল থেকে গ্লাস পড়ে ভেঙে যেতে দেখলে অবাক হই না আমরা, কিন্তু উল্টোটা ঘটলে চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যেতেই পারে। তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র সময়ের অভিমুখের কিছুটা ব্যাখ্যা অবশ্যই দেয়। যে কোনও চালু সিস্টেমের এনট্রপি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। অর্থাৎ, গঠনতন্ত্রের স্বাভাবিক প্রবণতা হল ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়া। ফলে, একটা সিস্টেমের ভেতরকার গণ্ডগোল যতই বাড়বে ততই কঠিন হবে আগের কোনও সুস্থির দশায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা।

নিউ ইয়র্ক সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্টডক্টরেট ছাত্র ক্রিস্টোফার ল্যিন বলছেন, গবেষণার মৌলিক প্রশ্ন ছিল দুটো। এক, বিশেষ কোনও গঠনতন্ত্রে কতটা শক্তিশালী এই অ্যারো অফ টাইম? দুই, আদৌ কি বোঝা সম্ভব কোষ বা নিউরোন থেকে কীভাবে সময়ের এই অভিমুখ সৃষ্টি হয়? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই স্যালামান্ডারের রেটিনার দিকে নজর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চোখের এই অংশে নিউরোনের ঠাসাঠাসি। কিন্তু একটা বিশেষ মুহূর্তে রেটিনাতে ওনারা লক্ষ্য করেছেন স্নায়ুকোষের চার প্রকারের কাজকম্ম।

ল্যিন মনে করছেন, এই গবেষণা থেকে আরও স্পষ্ট হবে ঠিক কোন উপায়ে বাইরের জগতের সময়ের ধারণা আমাদের মাথার ভেতর কাজ করতে থাকে।