ভারতে নতুন চিতাদের দৌড় কতদূর?

ভারতে নতুন চিতাদের দৌড় কতদূর?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

দীর্ঘ সাত দশক পর ভারতের অরণ্যে চিতার আবির্ভাব। নামিবিয়া থেকে গত শনিবার প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে  চার জোড়া চিতা আনা হল আমাদের দেশে। তাদের নতুন আবাস মধ্যপ্রদেশের শেওপুর জেলার কুনো পালপুরের জঙ্গলে। জীববৈচিত্র্য বাড়াতে নিঃসন্দেহে বেশ আশাবাদী পদক্ষেপ এটা। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ভারতের আর্দ্র বনাঞ্চলে ভিনদেশী চিতারা কদ্দিন টিকে থাকতে পারবে?

তথ্য ঘাঁটলে দেখা যাবে, কুনো পালপুরের এই অভয়ারণ্যে এককালে বাঘ, সিংহ বা চিতার মতো বিগ ক্যাট গোত্রের জানোয়ারের দল দাপিয়ে বেড়াত। এখানকার বাস্তুতন্ত্র তাদের জন্য মোটামুটি ঠিকঠাকই বলা চলে।

প্রাণী ও জঙ্গল বিশারদদের মতে, শিকার করে খাওয়ার মতো জন্তুর অভাবেই এ দেশ থেকে চিতার চিহ্ন বিলীন হয়ে গিয়েছিল। ১৯৫২ সালে চিতাকে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি বলে ঘোষণা করা হয় আমাদের রাষ্ট্রে। যদিও শেষ চিতাবাঘটা দেখা গিয়েছিল  ১৯৪৭ সালে। এবার কি তবে শেওপুরের জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্র মেরামতি করা হল চিতার জন্যে? বনকর্মীদের আশা কিন্তু তেমনটাই।

বনমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের এই অভয়ারণ্যে নতুন আমদানি করা সাভানা চিতাদের জন্যে ঐ অঞ্চলের অন্য লেপার্ড গোষ্ঠীকে পৃথক জায়গায় সরানো হয়েছে। আফ্রিকার চিতার চেয়ে ভারতের লেপার্ডরা বেশি আক্রমণাত্মক। অজানা অতিথিদের তারা কেনই বা ভালো চোখে দেখবে!

নামিবিয়া থেকে আনা পাঁচটা স্ত্রী আর তিনটে পুরুষ চিতাকে এক মাসের মতো রাখা হবে একেবারে আলাদা করে। অর্থাৎ, কোয়ারেন্টাইন। ভারতের ক্রান্তীয় পরিবেশে চিতাদের মানিয়ে নেওয়ার প্রথম ধাপ সেটা। তারপর তাদের উপযুক্ত নিরাপদ খাঁচায় রাখা হবে। সেখানে মোটামুটি চার মাস কাটাতে হবে এই বিদেশী চিতাদের। এই পদ্ধতিতে চলতে পারলে কিছু মাসের ভেতরেই ঐ চিতারা কুনো অভয়ারণ্যের পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে, এমনটাই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মোষের মাংস দেওয়া হবে খাবার হিসেবে। মধ্যভারতের বনাঞ্চলে এমনিতেই চিঙ্কারা, কৃষ্ণসারের মতো হরেক জাতের হরিণ রয়েছে। চিতার খাদ্য হিসেবে আদর্শ হরিণের এই প্রজাতিগুলো। প্রাণীবিজ্ঞানীরা বলছেন, অন্তত পাঁচ বছর টানা পর্যবেক্ষণে না রাখলে বোঝা যাবে না ভারতে চিতাদের ভবিষ্যৎ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 + one =