মায়ের কণ্ঠস্বরের বিশেষ গুরুত্ব আছে শিশুদের মস্তিষ্কে, কৈশোরে তেমনটা নয়

মায়ের কণ্ঠস্বরের বিশেষ গুরুত্ব আছে শিশুদের মস্তিষ্কে, কৈশোরে তেমনটা নয়

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ৩০ অক্টোবর, ২০২২

ছোট বাচ্চাদের মগজের সাথে মায়ের গলার আওয়াজের সুর বাঁধা থাকে। কিন্তু আরেকটু বড়ো হলেই অর্থাৎ কৈশোরে স্বাভাবিক বিদ্রোহী মেজাজের সৌজন্যে সেটা কেটে যায়। ততটা প্রভাব আর পড়ে না।
কিশোর কিশোরীদের অভিভাবকরা ব্যাপারটা অবশ্যম্ভাবী বলে হেসে উড়িয়ে দিতে পারেন। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ মেডিসিনের স্নায়ুবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল অ্যাব্রামও তেমনই বলছেন। কিন্তু বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তিতে। কিছুদিন আগেই জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্স পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ওনার গবেষণাপত্র।
বাচ্ছাদের জন্যে তার বাড়ি, পরিবার আর সর্বোপরি মায়ের সাথে গভীর যোগাযোগই সবচাইতে প্রথমে আসে। কিন্তু বয়েস যতই বাড়ে পরিবারের বাইরে বেরিয়ে বৃহত্তর সমাজের সাথে সম্পর্কস্থাপন করার কাজটা স্বাভাবিক নিয়মেই আবশ্যক হয়ে পড়ে। অ্যাব্রাম বলছেন, অন্য শ্রেনির আওয়াজ আর বক্তব্যের সাথে মেলবন্ধন তৈরি করতেই হয় একটা বয়সের পর।
শিশুদের মস্তিষ্কে কিছু কিছু অংশে বেশ কিছুটা বাড়তি সক্রিয়তা তৈরি হয় যখন তারা তাদের মায়ের গলা শোনে। কৈশোর বয়সে মগজের সেই অংশগুলোই বাইরের লোকের কণ্ঠস্বরে বেশি উত্তেজিত হয়। হাতেকলমে পরীক্ষার পর ড্যানিয়েল অ্যাব্রাম এমনই বলছেন। যেটা মূলত ১৩ থেকে ১৪ বছরের মধ্যেই ঘটে। এমনটা নয় যে ঐ বয়সে মায়ের কথায় একেবারেই সাড়া দেয় না মস্তিষ্কের বিশেষ ঐ অংশগুলো। কিন্তু অধিকতর মনোযোগ সৃষ্টি হয় অজানা কোনও কণ্ঠে, অচেনা কোনও পরিস্থিতিতে।
উইন্সকন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবপ্রত্নবিদ লেসলি সেল্টজার বলছেন, কণ্ঠস্বর খুবই শক্তিশালী সংকেত তৈরি করতে পারে। হতাশা আর মানসিক চাপে ডুবে থাকা মেয়েরা যখন ফোনে তাদের মায়ের গলা শোনে, তখন স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণের হার অনেকটাই কমে যায় সেই মেয়েদের। যদিও অ্যাব্রামের গবেষণার সাথে সেল্টজারের কোনও বিরোধিতা নেই। সেল্টজার আরও বলেছেন, বয়েস বাড়ার সাথে সাথে মায়ের উপর নির্ভরতা কমতে থাকে। তখন সমবয়সীদের সাথে দলগত জীবনযাপনটাই মুখ্য হয়ে ওঠে।