কোভিডের জবাব সাপের বিষে!

কোভিডের জবাব সাপের বিষে!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক সাপের বিষ! ব্রাজিলীয় গবেষকদের সাম্প্রতিকতম আবিষ্কার চমকে দেওয়ার মতোই! ব্রাজিলের একটি বিষাক্ত সাপের বিষ থেকে বিশেষ এক অণু গবেষণাগারে বার করে করোনায় আক্রান্ত বাঁদরদের শরীরে প্রবেশ করানো হয়েছিল। তারপর বিজ্ঞানীরা দেখেন, বিষের সেই অণু করোনা ভাইরাসকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত দমন করে রাখতে পারছে! রাফায়েল গুইডো, সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, যাঁর নেতৃত্বে এই গবেষণা চলছে, জানিয়েছেন যে তাঁরা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, করোনার ভাইরাসের দেহে একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন রয়েছে, আর সেই প্রোটিনকেই সাপের বিষ ছড়াতে দিচ্ছে না!
তাহলে সাপের বিষের যে অণু বার করা হয়েছে সেটা আসলে কী? গুইডো জানিয়েছেন, একটা পেপটাইড বা অনেকগুলো অ্যামিনো আসিড। যে অ্যাসিড সরাসরি ভাইরাসের একটা এনজাইমের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। যার নাম পিএলপ্রো। এই উপাদানটি ভাইরাসের পুনর্গঠনে দ্রুত সহায়তা করে। তাকে আটকাচ্ছে ওই বিষের অণুটি।
তবে মজার বিষয় হল এই খবর সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে যদি জনসাধারণ জানতে পারে, তাহলে তারা ভাবতেই পারে যে সাপ ধরতে পারলেই তো হল! আর তার থেকে বিষ বার করতে পারলেই কোভিড-১৯-এর সমাধান হয়ে যাবে। সাও পাওলোর আর এক হার্পেটোলজিস্ট জিসেপে বুয়োর্তোর এই প্রসঙ্গেই বক্তব্য, “ব্রাজিলে এখন সাধারণ মানুষ হয়ত জঙ্গলে ছুটবে জারারাকুসু (সাপটির নাম) ধরতে! ভাববে এই সাপ ধরে তারা পৃথিবীকে কোভিড-মুক্ত করে দেবে! কিন্তু ব্যাপারটা মোটেই তা নয়। শুধু সাপের বিষে কোভিড-মুক্ত হবে না মানুষ। সাপের ওই বিষ থেকে আরও অণু বার করতে হবে, বিভিন্ন রকমের ডোজ প্রয়োগ করে দেখতে হবে সেটা কতটা পরিমাণে কোভিড ভাইরাসকে প্রাথমিকভাবে দমন করতে সক্ষম হয়।”
ব্রাজিলের অন্যতম বিষাক্ত এবং বৃহত্তম সাপের নাম জারারাকুসু। লম্বায় ৬ ফুট। আটলান্টিকের উপকূলের জঙ্গলে পাওয়া যায় এই সাপ। একইসঙ্গে, বলিভিয়া, আর্জেন্টিনা এবং প্যারাগুয়েতেও এই সাপ আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × one =