আজ সারা দুনিয়ায় যতরকমের জন্তু জানোয়ার আমরা দেখতে পাই, তাদের বেশিটাই ক্যাম্ব্রিয়ান যুগের জীববিস্ফোরণের ফলশ্রুতি। সেটা আজ থেকে ৫৩৮.৮ মিলিয়ন বছর আগেকার কথা। কিন্তু তারপর পাঁচটা মূল প্রাণী মন্বন্তরে অনেকবার ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে ছোট বড়ো অনেক প্রাণীই।
কিন্তু আজ থেকে ৫৫০ মিলিয়ন বছর আগেকার সর্বপ্রথম মন্বন্তরকে চিহ্নিত করলেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। সেই যুগের নাম ছিল ইডিয়াকারান। ভার্জিনিয়া টেকের জীবাশ্মবিদ স্কট ইভান্স ও তাঁর সহকর্মীরা স্কুইশের মতো প্রাণীদের বিরল সব জীবাশ্ম থেকে নানা তথ্য বের করতে সক্ষম হয়েছেন। সেই সব প্রাণীরা ছিল ইডিয়াকারান যুগের। ঐ সময় জীববৈচিত্র্যের যে আকস্মিক বদল ঘটেছিল সেটা কেবলই নমুনা সংগ্রহের ত্রুটি নয়, বরং অনেকটাই সত্যি।
মূল কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, দেহের নরম অংশগুলো শক্ত অংশের মতো দ্রুত জীবাশ্মীভূত হয় না। কিন্তু আগেকার গবেষকরা ভেবেছিলেন যে নরম দেহের প্রাণীরা বুঝি ঐ যুগে ছিল না। কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ সঠিক মোটেই নয়। কারণ ঐ সময়ে নরম প্রাণীরা বেঁচে থাকলেও তাদের জীবাশ্ম তৈরি হয়নি উল্লেখিত কারণে।
ইডিয়াকারান যুগের প্রাথমিক পর্যায়ের নাম অ্যাভালন আর মধ্যম পর্যায়টা হল হোয়াইট সি স্টেজ। এই দুই উপযুগের মাঝের সময়টায় পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গিয়েছিল। অ্যাভালনের সময়কাল যেখানে ৫৭৫-৫৬০ মিলিয়ন বছর আগেকার, সেখানে হোয়াইট সি স্টেজ ছিল ৫৬০-৫৫০ মিলিয়ন বছর আগের। কিন্তু গবেষক দল তাঁদের প্রতিবেদনে লিখছেন যে ঐ দুই পর্যায়ে খাদ্যগ্রহণের ধরন, জীবনের অভ্যেস, বাস্তুতন্ত্রের স্তর আর প্রাণীদের সর্বাধিক দৈহিক আকারের মধ্যে অনেকটাই ফারাক ছিল।
বিজ্ঞানীরা এই দুই উপযুগের শেষ দিকটাকেই সর্বপ্রথম প্রাণী-মন্বন্তর বলে তাই চিহ্নিত করেছেন।