বাদুড়ের বাসাবিভ্রাটে হেন্ড্রা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা

বাদুড়ের বাসাবিভ্রাটে হেন্ড্রা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৭ নভেম্বর, ২০২২

বাদুড় থেকে ঘোড়া। সেখান থেকে মানুষ। এভাবেই ছড়িয়ে পড়ে হেন্ড্রা ভাইরাস। বিগত কয়েক দশকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ঘটনা ক্রমেই মাথাচাড়া দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়াতে।
অন্য প্রাণীর দেহ থেকে ভাইরাস যখন মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটায়, তখন পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থেকেই যায়। গত কয়েক বছরে আমাদের অভিজ্ঞতা অন্তত সেরকমই বলছে। সার্স কোভিড-১, সার্স কোভিড-২ অথবা হেন্ড্রা। তালিকাটা লম্বাই হয়ে চলেছে ক্রমাগত। উল্লেখযোগ্যভাবে উৎসগুলোর মধ্যে যথেষ্ট মিল খুঁজে পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী ডঃ পেগি এবি আর গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তুতন্ত্রবিদ ডঃ অ্যালিসন পিলের নেতৃত্বে একদল গবেষক সম্প্রতি এক বিশেষ অনুসন্ধানে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁরা গত ২৫ বছরের তথ্য নিয়ে বিচার করে দেখেছেন কীভাবে বাদুড়ের বাসস্থান বদলের সাথে হেন্ড্রা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে অস্ট্রেলিয়াতে। গবেষণাপত্রটা প্রকাশিত হল নেচার পত্রিকায়।
১৯৯৬ থেকে ২০২০ সাল অবধি হেন্ড্রা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ৬৩টা ঘটনা ওনারা লিপিবদ্ধ করেছেন। এগুলো মূলত বাদুড় থেকে ঘোড়াদের মধ্যে সংক্রমণ ঘটিয়ে এসেছে। দেখা গেছে, ২০০৬ সালের পর থেকে হেন্ড্রা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার হার অনেকটাই বেড়ে গেছে।
প্রধান কারণ হিসেবে গবেষকরা যা উল্লেখ করলেন সেটা অবশ্যই দুশ্চিন্তার। বাদুড়ের স্বাভাবিক আবাসস্থল আর খাবারের আকালের জন্যেই এই পরিস্থিতি। বাদুড়দের শহুরে এলাকায় আর কৃষিক্ষেত্রের কাছাকাছি বাসা বদলে নিতে হয়েছে তাদের স্বাভাবিক খাবারের অভাবে। তাদের মূল খাবার ছিল ইউক্যালিপটাসের ফুল। বিশেষত শীতের সময়ে। সহজাত জীবনচক্রের নকশা ছেড়ে বেরিয়ে এসে তাদের থাকার জায়গা হয়েছে লোকালয়ের কাছে। ফলে হেন্ড্রা ভাইরাস খুব সহজেই বাদুড়ের দেহ থেকে ঘোড়া হয়ে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটানোর সুযোগ পাচ্ছে।