খুনি বোলতার ইউরোপ আক্রমণ

খুনি বোলতার ইউরোপ আক্রমণ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২

কিছু কিছু প্রজাতির পতঙ্গের এক অদ্ভুত ক্ষমতা থাকে সংখ্যা বৃদ্ধি করে যে কোনো ধরনের বাস্তুতন্ত্রে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার। এইরকমই একধরনের পতঙ্গ হল এশিয়ান হর্নেট (Vespa velutina)। এরা মৌমাছি, হোভারফ্লাই এবং অন্যান্য পোকামাকড় শিকার করতে করতে, বছরে প্রায় ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) এরও বেশি জায়গা জুড়ে তার বাসস্থান প্রসারিত করে। প্রায় ২০ বছর আগে, ইউরোপে প্রথম এই হৃষ্টপুষ্ট ছোটো ছোটো হুলবিশিষ্ট বোলতা দেখতে পাওয়া যায়। এদেরকে অনেকসময় ‘মার্ডার হর্নেট’-ও বলা হয়। ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে ২০১৬ সালে প্রথম তারা ইউরোপের মাটিতে গিয়েছিল। জেনেটিক বিশ্লেষণের তথ্য থেকে জানা যায় যে ২০০৪ সালে একটা বোলতা সুদূর চীন থেকে ফ্রান্সে উড়ে এসে সারা পশ্চিম দেশ জুড়ে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে ছড়িয়ে পরে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্কের ইকোলজিস্ট সাইমন হ্যারিসনের মতে তাদের গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ধরনের সামাজিক পতঙ্গ খুব তাড়াতাড়ি সংখ্যা বৃদ্ধি করে কিন্তু এদের জিনগত বৈচিত্র্য খুবই কম। জার্নাল অফ হাইমেনোপ্টেরা-তে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ওই ইউনিভার্সিটির প্রাণীবিদ আইলিন ডিলান ও তার সহকর্মীরা মিলে প্রথম যে এশিয়ান হর্নেট আয়ারল্যান্ডে উড়ে এসেছিল তার তিনটি জিন বিশ্লেষণ করেছেন এবং ইউরোপ জুড়ে পাওয়া বোলতার জিন সিকুয়েন্সের সাথে তার তুলনা করেছেন। তারা দেখেছেন সমস্ত জিনই মাইটোকন্ড্রিয়াল জিন ছিল এবং তা স্ত্রী প্রজাতির মাধ্যমে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে ছড়িয়েছে পরেছে।
ডিলান এবং সহকর্মীরা বলেন যে ইউরোপের বোলতা – V. velutina –র জিনগত বৈচিত্র্য খুব কম তাই জৈবিক উপায়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। গবেষকরা আরও সতর্ক করেছেন যে দুর্ভাগ্যবশতভাবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে এই প্রজাতির আক্রমণের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।