অন্ত্রের সমস্যা চিহ্নিত করতে গ্রাসযোগ্য সেন্সর

অন্ত্রের সমস্যা চিহ্নিত করতে গ্রাসযোগ্য সেন্সর

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৪ মার্চ, ২০২৪

হেরিওট-ওয়াট বিশ্ববিদ্যালয় এবং বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়, এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বিন্দুর মতো প্রেসার সেন্সরযুক্ত একটা ইনজেস্টেবল ক্যাপসুল তৈরি করেছেন, যা রোগী গিলে ফেললে তা পেটে গিয়ে রোগীর অন্ত্রের চাপ এবং অন্ত্রের কোন জায়গা ঠিকমতো কাজ করছে না তা শনাক্ত করে চিকিৎসকদের রোগীর পৌষ্টিকতন্ত্রের গতিবিধি বা তার অসুবিধা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেবে। অন্ত্রের ভিতরের ছবি তোলার পরিবর্তে, সিস্টেমটা বুঝতে পারবে অন্ত্র সংকুচিত হচ্ছে কিনা, তা কতটা চাপ প্রয়োগ করছে আর অন্ত্রের কোন জায়গায় নিষ্ক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ডিভাইস জার্নালে এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তাদের আবিষ্কৃত এই ক্যাপসুল কৃত্রিম অন্ত্রে এবং প্রাণীদের মধ্যে পরীক্ষা করে সফল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অন্ত্রের সমস্যা বোঝার উপায় হল এন্ডোস্কোপি করা, যেখানে একটা নলের সাথে সংযুক্ত একটা ক্যামেরা থাকে যেখানে বাধা বা সমস্যা দৃশ্যমান হয়। স্কটল্যান্ডে, ক্যাপসুল এন্ডোস্কোপি ব্যবহৃত হচ্ছে, রোগীরা একটা ছোটো ক্যাপসুল গিলে ফেলে, তারহীন ক্যাপসুলটা অন্ত্রে ঘোরে আর একটা পর্দায় চিত্র পাঠাতে থাকে।
যখন পৌষ্টিকতন্ত্র কাজ করে না, বর্জ্য সরানোর জন্য এর সংকোচন ও প্রসারণ হয়না যে সমস্যা ছবিতে বিশেষ ধরা পড়ে না তা শনাক্ত করার জন্য গবেষকরা পাঁচ বছর গবেষণা করে এই নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। তারা আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে অন্ত্রের সাবকিউটেনিয়াস প্যাথোলজি দেখতে চেয়েছিলেন। বর্তমানে আবিষ্কৃত এই ক্যাপসুল, ৩সেমি লম্বা, এর ব্যাস ১সেমি, পাঁচটা খুব সূক্ষ, মানুষের একটা বা দুটো চুলের পুরুত্বের সমান বিন্দুর মতো সেন্সরযুক্ত থাকে। প্রেসার সেন্সরগুলো পৌষ্টিকতন্ত্রের আট বা নয় মিটার বরাবর গতিবিধি এবং কার্যকলাপ পরিমাপ করবে। সেন্সরের সংখ্যা এবং তাদের নমনীয়তার কারণে ডিভাইসটা খুব স্থিতিস্থাপক, আর এটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কাজ করতে থাকবে। সেন্সরগুলো খুব পাতলা হওয়ার জন্য আর কম-ঘর্ষণ হয় এমন আবরণ দিয়ে ঢাকা থাকার জন্য কোনোভাবেই অন্ত্রে আঁচড় পড়বে না বা ক্ষতি করবে না৷ গবেষকরা এই সিস্টেমটা টেকসই এবং সাশ্রয়ী করার দিকেও মনোনিবেশ করেছেন৷ সেমিকন্ডাক্টর উত্পাদন প্রক্রিয়ায় কম খরচে মাইক্রোচিপ তৈরির জন্য ব্যবহৃত হওয়া পদ্ধতিতে এটা তৈরি হয় ফলে এই সেন্সরগুলো অনেক সংখ্যক তৈরি করা যায়। হেরিওট-ওয়াট ইউনিভার্সিটিতে মেডিকেল ডিভাইস প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মার্ক ডেসমুলিজ এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন।