অল্প বয়সে দ্বিতীয় ভাষা শেখা মস্তিষ্ককে আরও দক্ষ করে তোলে

অল্প বয়সে দ্বিতীয় ভাষা শেখা মস্তিষ্ককে আরও দক্ষ করে তোলে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

আমরা জন্মের পর থেকেই শিখতে শুরু করি। নতুন কিছু শিখতে আমাদের সকলেরই ভালো লাগে। নতুন ভাষা, নতুন গান বা নাচ অথবা নতুন কোনও রান্না। আমরা যখন নতুন কিছু দেখি, শুনি বা শিখি, তখন তা আমাদের মস্তিষ্কে গেঁথে যায়। আমাদের মস্তিষ্ক তা ‘রেজিস্টার’ করে। এই শেখার মাধ্যমেই মস্তিষ্ক আমাদের কাজে সাহায্য করে। দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় কাজ বা যে কোনো ধরনের সৃজনশীল কাজ করতে ভূমিকা রয়েছে নিউরোপ্লাস্টিসিটির। নতুন কিছু শেখার সময়ে বা মস্তিষ্কে আঘাত থেকে তার কোশের ক্ষতি হলে মস্তিষ্কের নিজস্ব যে মানিয়ে নেওয়া বা খাপ খাওয়ানোর প্রক্রিয়া, তা কাজ করতে শুরু করে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় একেই বলে নিউরোপ্লাস্টিসিটি। শৈশবকালে মস্তিষ্কের এই ক্ষমতা অনেক বেশি থাকে, ভাষা শেখার ক্ষেত্রে নতুন নতুন সংযোগ তৈরি করে। পূর্বের গবেষণায় দেখা গেছে যে দ্বিতীয় ভাষা শেখা ইতিবাচকভাবে মনোযোগ, বেড়ে ওঠা, এমনকি মস্তিষ্কের আঘাতের পরে পুনরুদ্ধারের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়, অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্পেনের জারাগোজা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নতুন সমীক্ষা বৌদ্ধিক বিকাশের ক্ষেত্রে দ্বিভাষিকতার ভূমিকা বিশদভাবে বর্ণনা করেছে। অংশগ্রহণকারীদের এফএমআরআই স্ক্যান থেকে জানা গেছে যে একভাষিক ব্যক্তিদের তুলনায় দ্বিভাষিক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চলে সংযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই সংযোগটি অল্প বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা গেছে। এই প্রভাব সেরিবেলাম এবং ফ্রন্টাল কর্টেক্সের বাঁদিকে বিশেষভাবে শক্তিশালী ছিল। গবেষকদের মতে তাদের অধ্যয়ন শৈশবকালে দ্বিতীয় ভাষা শেখার পরামর্শ দেয়। এর ফলে মস্তিষ্কে কার্যকরী সংযোগ গড়ে ওঠে যা চিন্তাভাবনা করতে, কথোপকথনে এবং আমাদের পারিপার্শ্বিক জগতকে বুঝতে সাহায্য করে। অধ্যয়নের ফলাফল এও নির্দেশ করে যে দ্বিতীয় ভাষা শিশুকালেই শেখা প্রয়োজন তবেই মস্তিষ্কের বিস্তৃত অঞ্চলে নিউরোপ্লাস্টিসিটি দেখা যাবে। এর ফলে কর্টেক্সের সাথে সেরিবেলামের উচ্চতর সংযোগ স্থাপন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four − two =