আইআইটি দিল্লির দেখানো রাস্তায় কম খরচে স্বল্প সময়ে শহরের দূষণ অন্তত ৪০% কমানো গেছে। এর জন্য তারা দূষণের অবহেলিত নানা উৎস – কাঁচা রাস্তা, জমা বর্জ্য, আবর্জনা পোড়ানো এগুলো মোকাবিলা করতে বলেছেন। এর ফলে বায়ু মানের উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা গেছে। আইআইটি দিল্লির সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফিয়ারিক সায়েন্সের অধ্যাপক সাগ্নিক দে, এই দূষণের বিরুদ্ধে কার্যকারিতা পরিমাপ করতে পোর্টেবল কম খরচের সেন্সর (PLCS) ব্যবহার করেছেন। ৩রা অক্টোবর প্রকাশিত সমীক্ষায় দেশব্যাপী এই কর্মসূচি গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। উত্তর ভারতে শীতের মরসুমে বায়ুর গুণমান সাধারণত খারাপ হয়। এই অধ্যয়ন শহুরে স্থানীয় সংস্থাদের পরিবেশগত কাজের জন্য একটা সময়োপযোগী সুযোগ উপস্থাপন করছে। দূষণের বিচ্ছুরিত উৎস, ধুলো এবং আবর্জনা উত্তর ভারতের শহরগুলোর ২৫-৪০% দূষণের জন্য দায়ী৷ শিল্প নির্গমন এবং যানবাহন দূষণের তুলনায় এই উত্সগুলোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়না। দূষণের উপেক্ষিত উত্সগুলো মাথায় রেখে এই প্রোগ্রাম বায়ুর গুণমানের উন্নতি ও জনস্বাস্থ্য রক্ষার বাস্তব সমাধান দেখিয়েছে।
জাতীয় রাজধানী অঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট এর অধীনে, ডিসপারসড সোর্সেস প্রোগ্রাম শহুরে স্থানীয় সংস্থাগুলোর সাথে অংশীদারিত্বে বাস্তবায়িত করা হয়েছিল। এই প্রোগ্রাম দুটো বিভাগে সমস্যা সমাধানের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছিল- দীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্পমেয়াদী। দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার মধ্যে ছিল কাঁচা রাস্তা মেরামত, ভাঙা ফুটপাথ, ডিভাইডার মেরামত করা, বড়ো গর্ত সারাই। তবে এসবের জন্য বাজেটের অনুমোদন লাগে, আর অন্তত ৩০ দিনের বেশি সময় প্রয়োজন হয়। এমন বিষয় যা দ্রুত সমাধান করা যেতে পারে তা স্বল্পমেয়াদী সমস্যার মধ্যে পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে অবৈধভাবে জড়ো করা নির্মাণ বর্জ্য অপসারণ, ছোটো গর্ত ভরাট করা এবং সরকারি জমিতে অবৈধভাবে ফেলা আবর্জনা পরিষ্কার করা।
এই কাজের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি একটা বড়ো ভূমিকা নিয়েছে। জব টিকিট ও ড্যাসবোর্ডের সাহায্যে কাজ দেওয়া হয়েছে ও কাজের নজরদারি রাখা হয়েছে। এছাড়া দূষণ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগে ও পরে দূষণের মাত্রার রিয়েল-টাইম ডেটা ক্যাপচার করার ক্ষেত্রে পোর্টেবল কম খরচের সেন্সরগুলো খুবই সাহায্য করেছিল। এই উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে গবেষকরা নির্দিষ্ট কাজের সরাসরি প্রভাব পরিমাপ করতে পারেন। এর থেকে স্পষ্ট প্রমাণ হয় যে বিচ্ছুরিত দূষণের উত্সগুলোর বিরুদ্ধে সঠিক লক্ষ্যে প্রচেষ্টা নিলে বায়ু মানের পরিমাপযোগ্য উন্নতি ঘটে।