মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বার্ড ফ্লু-এর বিস্তারে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। বার্ড ফ্লু শুধুমাত্র মানুষের ক্ষেত্রে গুরুতর অসুস্থতার কারণ নয়, সম্প্রতি বিড়ালদের মধ্যে সংক্রমণের নতুন ঘটনা লক্ষ করা গেছে। ইউরোপ ও আমেরিকার বিজ্ঞানীরা বার্ড ফ্লু ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছেন, খুব দ্রুত ‘মিউটেশন’ বা জিনের রাসায়নিক বদল হচ্ছে এই ভাইরাসের। ফলে নতুন নতুন প্রজাতির জন্ম হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিজ্ঞানীরা একটি গুরুতর অসুস্থ রোগীর শ্বাসনালীতে পাওয়া ভাইরাসের একটি নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছেন তার মধ্যে জিনগত কিছু পরিবর্তন ঘটেছে, যদিও এমন কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি যে এটি সেই ব্যক্তির বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর বিশ্লেষণ অনুসারে খুব কম শতাংশের ভাইরাসে এমন কিছু জিনগত পরিবর্তন দেখা গেছে যার ফলে ভাইরাসটি মানবদেহের শ্বাসযন্ত্রের উপরিভাগে নির্দিষ্ট কোশের রিসেপ্টরের সাথে আরও ভালোভাবে সংযুক্ত হতে পারে। সিডিসি আরও উল্লেখ করেছে যে এই পরিবর্তনগুলো পাখিদের বা খামারের হাঁস-মুরগিদের মধ্যে দেখা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা গুরুতরভাবে অসুস্থ রোগীর মধ্যেই এই ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি হয় এবং সেখানেই পরিব্যক্তি ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেন যে এই পরিবর্তনগুলো মানুষের মধ্যে ভাইরাসটিকে আরও সংক্রামক করে তুলবে কিনা তা দ্রুত নির্ধারণ করা জরুরি।
এখনও অবধি বার্ড ফ্লু বা অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের যে দুই প্রজাতির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, তারা হল— এইচ৫এন১ এবং এইচ৭এন৯। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এইচ৫এন১ ভাইরাস তার জিনগত বিন্যাসের বদল ঘটিয়ে আরও সংক্রামক হয়ে উঠেছে। ২০২৪ সালে সিডিসি ৬৫জন ব্যক্তি শনাক্ত করেছে যারা বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত এবং তাদের ধারণা ডেয়ারি ও খামারে এমন অনেক কর্মী রয়েছে যাদের মধ্যে সংক্রমণ শনাক্ত করা যায়নি। ভাইরাসের এই ব্যাপক বিস্তারের ফলে মরসুমি জ্বর সর্দিকাশির ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সঙ্গে এদের মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ফলে এদের মধ্যে দ্রুত বিবর্তনের সম্ভাবনাকেও বৃদ্ধি করে, ঠিক যেমনভাবে ১৯১৮ এবং ২০০৯ সালে ফ্লু মহামারী সৃষ্টি হয়েছিল। গবেষকরা বিড়ালদের মধ্যেও বার্ড ফ্লু সংক্রমণের ঘটনা বৃদ্ধি পেতে দেখেছেন। ওয়াশিংটনে, একটি অভয়ারণ্যে প্রায় ২০টি বড়ো বিড়াল সম্প্রতি বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেন বিড়ালের মাধ্যমেও বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ছড়াতে পারে।