আবিষ্কৃত নয়া প্রজাতির মাংসাশী উদ্ভিদ

আবিষ্কৃত নয়া প্রজাতির মাংসাশী উদ্ভিদ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা।
Posted on ৯ জুলাই, ২০২২

সত্যজিতের লেখা ‘সেপ্টোপাসের খিদে’ গল্পটার মত। ছোটো জীবজন্তু থেকে শুরু করে পাখি—সবই ছিল তার খাদ্য। কিন্তু বাস্তবে মাংসাশী উদ্ভিদের অস্তিত্ব রয়েছে। এবার এক ভিন্ন প্রজাতির মাংসাশী উদ্ভিদের সন্ধান পেলেন গবেষকরা। যা শিকারের জন্য ফাঁদ বিছিয়ে রাখে মাটির নিচে। ইন্দোনেশিয়ার উত্তর কালিমান্তান প্রদেশের বোর্নিও দ্বীপে সন্ধান মিলল এই মাংসাশী উদ্ভিদ প্রজাতিটির। কলসপত্রী বা অন্যান্য মাংসাশী উদ্ভিদের মতই এই গাছের খাদ্যথলি বিবর্তিত হয়েছে পাতা থেকেই। তবে বাইরে থেকে দেখা যায় না সেই ফাঁদ। সবটাই লুকিয়ে থাকে মাটির তলায়। অনেকটা শিকড়ের মতোই।
এশিয়া মহাদেশের অন্যতম জীববৈচিত্রের হটস্পট বলে ধরে নেওয়া হয় ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও দ্বীপকে। জীবৈচিত্র্যের খোঁজেই বোর্নিও-তে হাজির হয়েছিলেন চেক প্রজাতন্ত্রের প্যালাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। দ্বীপের শিখরে আরোহণের সময়, গবেষকদের নজরে কাদায় চাপা পড়ে যাওয়া বেশ কিছু কলসপত্রী উদ্ভিদ। প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলেন, বৃষ্টির কারণে ধ্বস নামায় কলস-সহ গাছের অধিকাংশটাই বোধ হয় ডুবে গেছে কাদার আস্তরণে। পরবর্তীতে বোর্নিও-র শিখরে পাতা দেখে একই প্রজাতির গাছ চিহ্নিত করলেও, তাতে কলসপত্র বা শিকার ধরার ফাঁদের হদিশ পাননি তাঁরা। তারপর শুরু হয় অনুসন্ধান। গাছের নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়েই উদ্ঘাটিত হয় আসল রহস্য। আদতে এই বিশেষ প্রজাতির শিকারের ফাঁদ বিছিয়ে রাখে মাটির তলায়। বৃষ্টির জলে ধ্বস নামার কারণেই প্রকাশ্যে বেরিয়ে পড়েছিল সেই কলস। প্রায় ১১ সেমি দীর্ঘ এই কলসগুলি সাধারণত পিঁপড়ে, গুবরে পোকা, মশার লার্ভা, নিমাটোড এবং কেঁচো শিকার করে থাকে। আশ্চর্যের বিষয়, কয়েকটি নমুনার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে, গাছের পেটে এক নতুন প্রজাতির কেঁচো জাতীয় প্রাণীরও সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। সম্প্রতি এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে ‘ফটোকিস’ বিজ্ঞান পত্রিকায়। নতুন প্রজাতিটির নাম রাখা হয়েছে ‘নেপেনথিস পুডিকা’। সপ্তাহ খানেক আগেই ভারতের উত্তরাখণ্ডে সন্ধান মিলেছিল এক নতুন পতঙ্গভুক উদ্ভিদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × two =