এক নতুন ধরনের মজবুত কাচ আবিষ্কৃত হয়েছে

এক নতুন ধরনের মজবুত কাচ আবিষ্কৃত হয়েছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২১ আগষ্ট, ২০২৩

বিশ্বব্যাপী, কাচ উত্পাদন বছরে কমপক্ষে ৮৬ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত করে। পেন স্টেটে গবেষকরা লায়নগ্লাস নামে একটি নতুন ধরনের কাচ তৈরি করেছেন যা ৫০% কম কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত করে। এই কাচ উৎপাদনের ক্ষেত্রে শক্তির চাহিদা যথেষ্ট কম, আর প্রচলিত সোডা লাইম সিলিকেট গ্লাসের তুলনায় ক্ষতি প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও বেশি। পেন স্টেটের ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক জন মাউরো বলেছেন যে তাদের লক্ষ্য হল দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য টেকসই কাচ উত্পাদন করা। লায়নগ্লাস তৈরির ক্ষেত্রে কার্বন আছে এমন যৌগকে তারা ব্যবহার করেননি আর এই কাচের গলনাঙ্ক সাধারণ কাচের তুলনায় কম।
সোডা লাইম সিলিকেট গ্লাস, জানালার কাচ থেকে শুরু করে খাবার টেবিলের কাচ প্রভৃতি বিভিন্ন দৈনন্দিন জীবনের জিনিসে ব্যবহৃত হয়। এই কাচ তিনটি প্রাথমিক উপাদান গলিয়ে তৈরি করা হয়: কোয়ার্টজ বালি, সোডা অ্যাশ এবং চুনাপাথর। সোডা অ্যাশ হল সোডিয়াম কার্বনেট এবং চুনাপাথর হল ক্যালসিয়াম কার্বনেট, আর এই দুটি জিনিসই গলানো হলে তার থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) নির্গত হয়, যা একটি গ্রিনহাউস গ্যাস। কাচ গলানোর প্রক্রিয়া চলাকালীন, কার্বনেট যৌগ ভেঙে অক্সাইড তৈরি করে ও কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয় যা বায়ুমণ্ডলে মিশে যায়। উচ্চ তাপমাত্রায় কাচ গলানোর জন্য চুল্লি গরম করা প্রয়োজন আর এর থেকেই CO2 নির্গমনের সিংহভাগ আসে। লায়নগ্লাসের ক্ষেত্রে গলনাঙ্ক প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম আর তাই প্রচলিত সোডা লাইম গ্লাসের তুলনায় ৩০% শক্তি কম খরচ হয়। লায়নগ্লাস শুধুমাত্র পরিবেশে কম ক্ষতি করে তাই নয়, এটি প্রচলিত কাচের থেকেও অনেক বেশি শক্তিশালী। গবেষকরা বলেছেন যে পেন স্টেটের নিটানি লায়ন মাসকটের নামে নামকরণ করা নতুন কাচটি প্রচলিত কাচের তুলনায় ফাটল প্রতিরোধ করার ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। স্ট্যান্ডার্ড সোডা লাইম গ্লাসের তুলনায় লায়নগ্লাস অনেক শক্ত এবং ফাটল প্রতিরোধী ক্ষমতা কমপক্ষে ১০ গুণ বেশি। মাউরো আশা রাখেন যে লায়নগ্লাসের উন্নত শক্তি হওয়ার কারণে এর থেকে তৈরি পণ্যগুলো অনেক হালকা ওজনের হবে ও পাতলা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 1 =