একটা দ্বীপে ইঁদুরের বংশ লোপাট!

একটা দ্বীপে ইঁদুরের বংশ লোপাট!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২

মানুষ যখন কোনো দ্বীপে প্রথমবার পা রেখেছে, তার সাথে সাথে ইঁদুরও দ্বীপে প্রবেশ করেছে। এই ইঁদুরের (M.musculus) উৎপাত দূর করে, তাদের তাড়াতে, বা সংখ্যা কমাতে বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের নিজস্ব জিন অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সে প্রকাশিত একটা নিবন্ধে গবেষকরা বলছেন, কয়েকশো ইঁদুরের মধ্যে পরিবর্তিত জিন দিয়ে, ছেড়ে দিলে দেখা যাবে যে, ২৫ বছরের মধ্যে দ্বীপের বাড়িতে উৎপাত করা ইঁদুরগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ এই প্রতিস্থাপিত জিন, ইঁদুরদের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি করবে। এক্ষেত্রে, ইঁদুরদের জিনের মধ্যে একটা অংশের পরিবর্তন করা হয়, যা খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী প্রজন্মে পুনরাবৃত্তি করে, যে পুনরাবৃত্তির হার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।
পুনরাবৃত্তির হার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়ার পিছনে কারণ হল, প্রতিস্থাপিত জিনগুলো হ্যাপ্লোটাইপ হিসেবে অবস্থান করে। অর্থাৎ, ক্রোমোজমের একটা বাহুতে কাছাকাছি কিছু জিন অবস্থান করে, যারা একসাথে নিজেদের প্রতিলিপি তৈরি করে, তাদের মধ্যে ক্রসওভার বিশেষ একটা হয় না। বাড়ির ইঁদুরগুলোর জিনে ‘t’ হ্যাপ্লোটাইপ থাকে, যাদের পরবর্তী প্রজন্মে পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৫%, যেখানে সাধারণ জিনের ক্ষেত্রে এই হার ৫০%।
জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর একজন জীববিজ্ঞানী আনা লিন্ডহোম বলেছেন এই হ্যাপ্লোটাইপ জিনের সুবিধা হল, এটার প্রাকৃতিকভাবে পুনরাবৃত্তি হয়েছে এবং বন্য ইঁদুরের জিনে এটার কোনো প্রতিরোধ তৈরি হয় নি। এটি M. musculus ছাড়া অন্য প্রজাতিতে এই হ্যাপ্লোটাইপ পাওয়া যায় না, ফলে এটা অন্যান্য ইঁদুরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম।