এবার ম্যালেরিয়ার ভ্যাকসিন

এবার ম্যালেরিয়ার ভ্যাকসিন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৯ আগষ্ট, ২০২১

করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সামনে সারা পৃথিবীর শিশুজীবন বিপন্ন বলে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে। করোনার ভ্যাকসিন এখনও তাদের কাছে পৌঁছে দেবার মতো তথ্যের শক্তি আমাদের হাতে আসেনি। কিন্ত এর মধ্যেই অন্য আরেকটি ভ্যাকসিন নিয়ে এসে উপস্থিত হয়েছে ভীষণ আশাব্যঞ্জক খবর। আর তা কালান্তক ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে। আফ্রিকার বুরকিনা ফাসো, আর মালি তে শিশুদের উপর প্রয়োগ করে দেখা গেছে যে ম্যালেরিয়ার প্রথম ভ্যাকসিন আর ম্যালেরিয়ার ওষুধ একসাথে কিন্তু পর্যানুক্রমিকভাবে ব্যবহার করে ম্যালেরিয়ার মৃত্যু প্রায় ৭২ শতাংশ কমানো যায়। লন্ডনের স্কুল অফ্‌ হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ড্যানিয়েল চন্দ্রমোহন এবং অন্যদের পরিচালিত এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আলোড়ন তৈরি করা ফল প্রকাশিত হয়েছে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ্‌ মেডিসিনের ২৫ শে আগস্ট সংখ্যায়। প্রতিবছর পৃথিবীতে ম্যালেরিয়ার ফলে মারা যান প্রায় চার লক্ষ মানুষ। উন্নয়নশীল দেশগুলো, বিশেষতঃ আফ্রিকাতে এর প্রকোপ সব থেকে বেশী। ভ্যাকসিন আর ওষুধের একসাথে প্রয়োগের ফলে ম্যালেরিয়ার মৃত্যু কমা এবং হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন কমে যাওয়ার যে তথ্য চন্দ্রমোহন এবং অন্যান্যদের গবেষণায় পরিবেশিত হয়েছে তা ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট এর প্রয়োগে ডায়ারিয়ার মৃত্যু হ্রাসের মতোই যুগান্তকারী ও লোকস্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ দিক খুলতে চলেছে।
লন্ডন স্কুল অফ্‌ হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষকরা এই প্রয়োগিক গবেষণা চালিয়েছেন প্রায় ৬৮০০ শিশুর উপর। গবেষণার নিয়ম অনুযায়ী তাদের ভাগ করা হয়েছিল তিন ভাগে। একদল পেয়েছিল শুধু ভ্যাকসিন, একদল শুধু ওষুধ (সোলফাডক্সিন- পাইরিমিথামিন এবং অ্যামোডায়াকুইন)। তৃতীয় দল পর্যায়ুক্রমিকভাবে দুটি (ভ্যাকসিন এবং ওষুধ) একসাথে। তিন বছর ধরে ৫-১৭ মাসের শিশুদের উপর পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গেল যে, টীকা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে তো বটেই, টীকা আর ওষুধের একসাথে প্রয়োগ সবথেকে যুৎসই। প্রয়োগের পরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল তিন বছর ধরে।
জীবনযাত্রার মান বাড়িয়ে সংক্রামক ব্যাধির প্রসার বন্ধ করা অবশ্যই লোকস্বাস্থ্যের সব থেকে ফলদায়ী দিক। সেটা না হওয়া পর্যন্ত টীকা ও ওষুধ দিয়ে যদি কিছু মানুষের প্রাণ বাঁচানো যায়- তাই চলুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three − 1 =