এমপক্স সংক্রমণ রুখতে বিদ্যমান টীকার ব্যবহার

এমপক্স সংক্রমণ রুখতে বিদ্যমান টীকার ব্যবহার

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
পক্স

করোনা-আতঙ্ক শেষ হয়েছে প্রায় দুবছর হতে চলল। কিন্তু তারপরে আবারও এক নতুন আতঙ্ক এসে হাজির- ‘এমপক্স’। যা বিশ্ব জুড়ে পরিচিত ‘মাঙ্কিপক্স’ নামে। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ার পর এ বার মাঙ্কিপক্স হানা দিয়েছে বিশ্বের অন্যত্র। ফলত তৎপরতা বেড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। ২০২২ সালে হু-এর তরফে বিশ্ব জুড়ে জারি করা হয় জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা। জনস্বাস্থ্য চিকিৎসকদের বক্তব্য, মাঙ্কিপক্সের ভাইরাসের একাধিক উপরূপ অত্যন্ত দ্রুত মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। এই প্রক্ষাপটে আশার আলো দেখাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এই ভাইরাল সংক্রমণকে প্রতিরোধ করতে পারে বিদ্যমান ভ্যাকসিনের মাত্র একটি ডোজ। এমনটাই জানা যাচ্ছে এই নতুন গবেষণায়। নতুন ওষুধ এবং ভ্যাকসিন তৈরিতে সময় এবং অর্থ দুই লাগে, যা অন্যথায় রোলআউটে ব্যয় করা যেতে পারে। হু-এর ঘোষণার পর থেকে পরিচালিত পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে মডিফায়েড ভ্যাক্সিনিয়া আঙ্কারা-বাভারিয়ান নর্ডিক (এমভিএ-বিএন) টীকা এমপক্স প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ৩৬-৮৬% কার্যকর হতে পারে। যদিও পাবলিক হেলথ অন্টারিও এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য চিকিত্সক ক্রিস্টিন নাভারোর নেতৃত্বে গবেষকরা স্বীকার করেন যে পর্যবেক্ষণমূলক তথ্যে পক্ষপাতের প্রবণ থাকতে পারে যা বিভ্রান্তিকর বা ভুল ফলাফলের দিকে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এই জরুরি পরিস্থিতিতে, যেখানে আবার এমপক্সের সংক্রমণ বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং “সবচেয়ে বিপজ্জনক” স্ট্রেন এখনও আফ্রিকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে, সেখানে পর্যবেক্ষণমূলক ফলাফল দ্রুত খুব প্রয়োজনীয় সমাধান দিতে পারে। তাই গবেষকরা র‍্যান্ডামাইজড ট্রায়ালের নীতিগুলো পর্যবেক্ষণমূলক তথ্যের বিশ্লেষণে প্রয়োগ করেছেন। গবেষণায় কানাডার অন্টারিও থেকে ৩২০৪ জন পুরুষ এমপক্সের সংস্পর্শে আসার আগে এমভিএ-বিএন টীকা পেয়েছিলেন। এই দলটির তুলনা করা হয় অন্য ৩২০৪ জনের সাথে যারা টীকা পাননি। অধ্যয়নের সময়কাল জুড়ে, ৭১ জন ব্যক্তির এমপক্স সংক্রমণ নির্ণয় করা হয়েছিল, যার মধ্যে ২১ জন টীকাপ্রাপ্ত ছিল এবং ৫০ জন টীকাপ্রাপ্ত ছিল না। ফলে বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিনের একক ডোজের আনুমানিক কার্যকারিতা ৫৮% শতাংশ নির্ধারণ করেন। গবেষকরা আরও দেখেন যে এমভিএ-বিএন টীকা পাওয়ার প্রথম ১৪ দিন পরে টীকা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে কারণ আমাদের শরীর পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি প্রতিক্রিয়া বিকাশের জন্য খানিকটা সময় নেয়। তবে এই অধ্যয়ন প্রমাণ করে যে এমভিএ-বিএন টীকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এমপক্সের সংক্রমণ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। সুতরাং গবেষকদের মতে সংক্রমণ প্রতিরোধে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের জন্য এই টীকাকে সহজলভ্য করতে হবে। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে