কয়েক দশক ধরে ব্যবহৃত এক ডোরস্টপারের মূল্য কয়েক কোটি!

কয়েক দশক ধরে ব্যবহৃত এক ডোরস্টপারের মূল্য কয়েক কোটি!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ডোরস্টপারের মূল্য কয়েক কোটি!

অবহেলায় পড়ে থাকা নানা টুকিটাকি জিনিস, কখনও কখনও তার মাঝেই পাওয়া যায় অমূল্য রতন। এর এক বড়ো উদাহরণ হল রোমানিয়ার এক বৃদ্ধা ভদ্রমহিলার বাড়িতে পড়ে থাকা এক বিশাল পাথর। এই পাথর নদীর পাড় থেকে কুড়িয়ে এনে তিনি দরজা খোলা রাখার জন্য ব্যবহার করছিলেন। শুনলে চোখ কপালে উঠবে এই পাথরের দাম ১১ লক্ষ ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় ৯ কোটি ২১ লক্ষ টাকার ওপরে। ৩.৫ কিলোগ্রাম ওজনের এই পাথরটা দক্ষিণ-পূর্ব রোমানিয়ার বুজাও নদীর তটে এই ভদ্রমহিলা পেয়ে তা বাড়িতে নিয়ে আসেন। এল পাইসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার কুড়িয়ে আনা পাথর বিশ্বের সবচেয়ে বড় অক্ষত অ্যাম্বার হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে গাছের রজন জমে অ্যাম্বারে পরিণত হয়। সময়ের সাথে সাথে, এই সান্দ্র পদার্থ একটা শক্ত, উষ্ণ আভাযুক্ত জীবাশ্মে পরিণত হয় যা রত্ন হিসাবে বিশ্বে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। রোমানিয়ায়, কোলটি গ্রামে বুজাও নদীর তটের বালিতে অ্যাম্বার পাওয়া যায়। ১৯২০ সাল থেকে এখানে অ্যাম্বার খনন চলছে। গাঢ় লাল রঙের আভার জন্য বিখ্যাত এই অ্যাম্বার, রুমানাইট নামে পরিচিত। এটা পুরস্কারও জিতেছে।
মজার বিষয় হল দরজায় ঠেকনা দেওয়ার কাজে দশকের পর দশক পাথরের মতো ব্যবহৃত এই অ্যাম্বার সকলের নজর এড়িয়ে গেছে। এমনকি এ বাড়িতে একবার চোরের উপদ্রব হলেও তারা এই পাথর চিনতে পারেনি। ভদ্রমহিলার মৃত্যুর পর তার যে আত্মীয় এই সম্পত্তি পান, তার মনে এই পাথর নিয়ে সন্দেহ হওয়াতে তিনি পোল্যান্ডের ক্রাকাও মিউজিয়ামের বিশেষজ্ঞকে এটা দেখান। বিশেষজ্ঞ জানান এই অ্যাম্বার ৩.৮ -৭ কোটি বছরের পুরোনো। রোমানিয়ার জাতীয় এই সম্পদ প্রভিন্সিয়াল মিউজিয়াম অফ বুজাও-এ রক্ষিত আছে। এখানকার ডিরেক্টর জানিয়েছেন, এটা বৈজ্ঞানিক ও ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ এক নমুনা। এ ধরনের ঘটনার আর একটা উদাহরণ পাওয়া গিয়েছিল মিশিগানে। এক ব্যক্তি তার দরজার অবস্থান ঠিক রাখার জন্য কয়েক দশক ধরে একটা উল্কাপিণ্ড ব্যবহার করছিলেন, যার বাজার মূল্য ১ লক্ষ ডলার। আমাদের অজান্তে এরকম কত কিছুই হয়তো আমাদের নজর এড়িয়ে আশেপাশে পড়ে আছে।