করোনা প্রতিরোধে পথ দেখাবে শুয়োর!

করোনা প্রতিরোধে পথ দেখাবে শুয়োর!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৬ জানুয়ারী, ২০২২

গত দু’বছরের অতিমারি পর্বে বহু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শুয়োরের দেহে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের কোনও প্রজাতি (‘স্ট্রেন’) বা রূপ (‘ভেরিয়্যান্ট’)-ই সংক্রমণ ঘটাতে পারে না। শুয়োরের শরীরে ঢুকতে পারে, শুয়োরের দেহকোষে পৌঁছে নিজের স্পাইক প্রোটিন দিয়ে নোঙরও ফেলতে পারে করোনাভাইরাস। কিন্তু তার পর আর শুয়োরের কোষের ভিতরে ঢুকতে পারে না। ফলে, নিজেদের বংশবৃদ্ধিও ঘটাতে পারে না। তাই কোভিডে সংক্রমিত হয় না শুয়োররা। অন্য শুয়োর বা অন্যান্য প্রাণীকে কোভিডে সংক্রমিতও করে না।
কিন্তু করোনাভাইরাস কেন পারে না শুয়োরকে সংক্রমিত করতে, তার কারণ জানা যায়নি এত দিন। সেই কারণটিই জানাল আমেরিকার আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এই গবেষণা।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের কথায়, এর ফলে, কোভিড চিকিৎসায় একেবারে নতুন একটি পথ খুলে যেতে পারে ভবিষ্যতে। যার ফলে, শুয়োরের মতোই আর কোভিডে সংক্রমিত হবে না মানুষ। গবেষকরা দেখেছেন, করোনাভাইরাস পরিবারের অন্য সদস্যরা এর আগেও শুয়োরের দেহে ঢুকেছে। কিন্তু তাদের সংক্রমিত করতে পারেনি। কারণ, শুয়োরের দেহকোষ বহিরাগত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লড়াইটা অন্য ভাবে করেছে। কোন ভাবে? তা বুঝতে একটি পরীক্ষা চালান গবেষকরা। গবেষণাগারে শুয়োর ও মানুষের শ্বাসনালীর কালচার করা কোষগুলির একেবারে বাইরের স্তরে (‘এপিথেলিয়াল সেল্‌স’) করোনাভাইরাস ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। গবেষকরা দেখতে চেয়েছিলেন, ভাইরাসকে রুখতে শুয়োর আর মানুষের শ্বাসনালীর কোষগুলি কী কী কাজ করে। কী ভাবে করে।
গবেষকরা দেখে‌ছেন, সেই সময় যে কোষগুলির উপর এসে বসেছে বহিরাগত ভাইরাস, সেগুলিকে মেরে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় দেহকোষে। আদতে যা কোষগুলির আত্মহননের প্রক্রিয়া। যার নাম— ‘সেল্‌স ডেথ প্রসেস’। সেটা যেমন শুয়োরের দেহকোষে হয়, হয় মানুষের দেহকোষেও। তবে একই ভাবে হয় না। একই হারেও হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − five =