কিছু সামুদ্রিক প্রাণী আজ বিলুপ্তির পথে

কিছু সামুদ্রিক প্রাণী আজ বিলুপ্তির পথে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১১ মার্চ, ২০২৪

গভীর সমুদ্রের অতল জলরাশির মধ্যে, সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২০০ মিটার গভীরতার নীচে রয়েছে আমাদের পৃথিবীর বৃহত্তম এবং সবচেয়ে জটিল পরিবেশের মধ্যে একটি। এটি বিশ্বের সমুদ্র অঞ্চলের ৮৪% এবং এর আয়তনের ৯৮% জুড়ে রয়েছে – এবং একটি বিশাল জীববৈচিত্র্যের আবাসস্থল। যদিও এই বিষয় নিয়ে সেভাবে অধ্যয়ন করা হয়নি এবং এই গভীর জলের জীববৈচিত্র্যের অবস্থার কোনও বিস্তৃত মূল্যায়ন নেই এবং বিভিন্ন প্রজাতির রক্ষার জন্য কোনো নির্দেশনা বা কোনো নীতি-প্রাসঙ্গিক সূচক নেই৷ এটি গভীর জলে বসবাসকারী হাঙর এবং রে বা শঙ্কর জাতীয় মাছের জন্য বিশেষভাবে প্রযোজ্য। এই গবেষণায় দেখা হয়েছে গভীর সমুদ্রে আমাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব কীভাবে এই প্রজাতির জন্য হুমকি বৃদ্ধি করে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার রেড লিস্ট অফ থ্রেটেনড স্পিসিস ব্যবহার করে দেখা গেছে ১৯৮০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে গভীর জলের হাঙর এবং শঙ্কর প্রজাতির মাছ আরও বিপন্ন হয়েছে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে৷
অনুমান করা হয়েছে যে সাতটির মধ্যে একটি অর্থাৎ প্রায় ১৪% বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সামুদ্রিক মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে গভীর জলের হাঙর বা রে ফিস অতিরিক্ত শোষণের জন্য সবচেয়ে সংবেদনশীল। এর কারণ তাদের দীর্ঘ জীবনকাল। গ্রিনল্যান্ডের হাঙর, সোমনিওসাস মাইক্রোসেফালাস সম্ভবত ৪৫০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তাছাড়া এদের প্রজনন হারও কম যেমন সেন্ট্রোফরাস গ্রানুলোসাস নামের হাঙর জীবনে মাত্র ১২টি ছানার জন্ম দিতে পারে। হাঙর তার মাংস এবং যকৃতের তেলের জন্য ধরা হয়। অনেক দেশে, এই পণ্যগুলোর চাহিদা ও মূল্য খুবই বেশি। যদিও এই সব নতুন ব্যবসা নয়, তবে বিশ্বের সম্প্রসারণ এবং কড লিভার তেলের ব্যবহারের বৈচিত্র্য এটিকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। এর ফলস্বরূপ হাঙরের জনসংখ্যা কমে আসছে এবং অল্প সময়ের মধ্যে বা ২০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এর বিলুপ্তির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে। ভ্যাকসিন, প্রসাধনী এবং মানব স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন পণ্যে প্রয়োগের জন্য হাঙরের এই তেল বেশ জনপ্রিয়। গভীর জলের হাঙরের ক্ষেত্রে অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা কম। বিশ্বের অর্ধেক হাঙর এবং শঙ্কর প্রজাতির মাছকে বিলুপ্তির সংকট থেকে মুক্ত করার জন্য গভীর সমুদ্রে কার্যকর সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের এখনই সময়।