কোভিড টিকাকরণ কতটা উপকারী

কোভিড টিকাকরণ কতটা উপকারী

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ মার্চ, ২০২৪

করোনা ভইরাসের থাবায় যখন বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি মানুষের প্রাণনাশের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তখন ভরসা জুগিয়েছিল কোভিডের টিকা। সম্প্রতি নতুন গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন শুধু করোনভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেয় না বরং SARS-CoV-২ এর সাথে সম্পর্কিত হার্ট ফেলিওরের এবং ধমনীতে রক্ত জমাট বাধার ঝুঁকিও হ্রাস করে। গবেষণায় ইউরোপ, স্পেন এবং ইস্টোনিয়ার প্রায় ১০.১৭ মিলিয়ন টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং ১০.৩৯ মিলিয়ন টিকা না নেওয়া ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করে তাদের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বয়স, লিঙ্গ এবং পূর্ব-বিদ্যমান অবস্থার কথা বিবেচনা করে দেখা গেছে যাদের কোভিড-১৯ –এর টিকা দেওয়া হয়েছিল তাদের এক বছর পর্যন্ত কার্ডিয়াক এবং রক্ত জমাট বাধা বা ক্লট-সম্পর্কিত জটিলতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিজ্ঞানী নুরিয়া মারকাডে-বেসোরা বলেছেন যে টিকাকরণ সংক্রমণ কমাতে কার্যকর এবং গুরুতর কোভিড-১৯-এর ঝুঁকি হ্রাস করে। সুতরাং যে সব ব্যক্তিদের মধ্যে টিকা নেওয়ার ভীতি রয়েছে এবং যারা ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে চিন্তিত তাদের টিকাকরণ সম্বন্ধে সচেতন করা যেতে পারে। সংক্রমণ পরবর্তী প্রথম ৩০ দিনে যে সব ব্যক্তিদের টিকাকরণ হয়নি তাদের তুলনায়, কোভিড-১৯ টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের শিরায় রক্ত জমাট বাধার ঝুঁকি ৭৮% কম, ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি ৪৭% কম এবং হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি ৫৫% কম। যদিও সময়ের সাথে সাথে, শিরায় রক্ত জমাট বাধার প্রবাণতার হার কমে যাওয়া হ্রাস পেলেও, কোভিড সংক্রমণের ১৮১ থেকে ৩৬৫ দিন পর্যন্ত এই ঝুঁকি যথাক্রমে ৫০%, ৩৮% এবং ৪৮% কম ছিল৷ যদিও পূর্ববর্তী গবেষণায় অনুরূপ ফলাফল পাওয়া গেছে তবুও অধ্যয়নে অন্তর্ভুক্ত লোকের সংখ্যা এবং যে সময়কাল পর্যন্ত এই পর্যবেক্ষণ চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এটি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড়ো ও সর্বাঙ্গীণ অধ্যয়নের মধ্যে একটি। কোভিড-১৯ সংক্রমণের সময়কালে রক্ত জমাট বাধার কারণে স্ট্রোক এবং হার্ট ফেলিওর বেশ সাধারণ ছিল। যদিও গবেষণার মাধ্যমে কোনো কার্যকারণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়নি তবে এটি দেখায় যে কোভিড রোগের বিরুদ্ধে টিকাকারণ হার্ট সম্পর্কিত জটিলতার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। গবেষকের দল স্বীকার করে যে যদিও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং কার্যকর এবং প্রাপ্ত সুবিধা সম্ভাব্য অসুবিধার চেয়ে বেশি তবুও এই বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। গবেষণাটি হার্ট নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।