সাম্প্রতিক এক গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে, একজিমায় (অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস) আক্রান্ত শিশুদের জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন শুধু ভাইরাস প্রতিরোধে নয়,তাদের অ্যালার্জি ও সংক্রমণজনিত সমস্যার ঝুঁকি কমাতেও কার্যকর ভূমিকা পালন করে। যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডো শহরে আয়োজিত আমেরিকান কলেজ অব অ্যালার্জি, অ্যাজমা অ্যান্ড ইমিউনোলজি (এসিএএআই)-এর বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রটি চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করেছে।
গবেষণাটি পরিচালনা করেন মেডিকেল গবেষক ট্রিস্টান এনগুয়েন ও তাঁর সহকর্মীরা। তাঁরা ১১,৫১৬টি শিশু রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করেন—যাদের মধ্যে ৫,৭৫৮ জন কোভিড ভ্যাকসিনপ্রাপ্ত এবং সমান সংখ্যক শিশু ভ্যাকসিন পায়নি। সব শিশুর বয়স ছিল ১৭ বছরের নীচে। যেসব শিশু আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিল বা গুরুতর অসুখে ভুগছিল, তাদের এই বিশ্লেষণ থেকে বাদ দেওয়া হয়।
গবেষণার ফলাফল ছিল আশ্চর্যরকম ইতিবাচক। দেখা গেছে, ভ্যাকসিনপ্রাপ্ত শিশুদের মধ্যে কান ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, ত্বকের রোগ এবং অ্যালার্জিজনিত সমস্যার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। যেমন, ওটাইটিস মিডিয়া (কানের মধ্য অংশের সংক্রমণ), নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, সাইনাস ইনফেকশন, ইমপেটিগো, হাঁপানি ,অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস, ও খাবারজনিত অ্যানাফাইল্যাক্সিস প্রভৃতি অ্যালার্জিজনিত সমস্যা সব ক্ষেত্রেই সংক্রমণের হার রীতিমতো হ্রাস পেয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই এসব রোগের সূচনা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর দেরিতে ঘটেছে, যা ভ্যাকসিনের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ ক্ষমতার ইঙ্গিতবাহী।
প্রধান গবেষক ড. ঝিবো ইয়াং বলেন, এই ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে কোভিড ভ্যাকসিন শুধু করোনাভাইরাস থেকেই সুরক্ষা দেয় নি, বরং একজিমায় আক্রান্ত শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সামগ্রিকভাবে শক্তিশালী করে তুলেছে। সে কারণেই অ্যালার্জি ও সংক্রমণের অগ্রগতি রোধ করা গেছে সহজে।
দেখা গেছে, ভ্যাকসিনের প্রভাবস্বরূপ শিশুর মানসিক বা শারীরিক বিকাশের ক্ষেত্রে কোনো নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। বরং গবেষকরা মনে করছেন, এ ধরণের টীকা একজিমা আক্রান্ত শিশুদের একজিমা, হাঁপানি ও অ্যালার্জিক রাইনাইটিস – এই তিন সংশ্লিষ্ট সমস্যার অগ্রগতি থামাতে সাহায্য করতে পারে।
সূত্র : Kids With Eczema See Surprising Benefits From the COVID Vaccine By American College of Allergy, Asthma, and Immunology November 6, 2025.
