কোশ নিজেদের মধ্যে কথা বলে

কোশ নিজেদের মধ্যে কথা বলে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৮ জুলাই, ২০২৩

একস্তরের কোশ দ্বারা আবৃত পেট্রি ডিশ দেখলে মনে হয় কোশেরা সেখানে স্থির হয়ে আছে। কিন্তু বাস্তবে তারা নড়াচড়া করে, ঘোরে, এবং নিজেরা বিশৃঙ্খল আচরণও করে। আমাদের মতো, কোশ যোগাযোগ করে, তাদের নিজস্ব বিশেষ উপায়ে, তরঙ্গকে নিজেদের সাধারণ ভাষা হিসাবে ব্যবহার করে। কোশ একে অপরকে বলে যে কোথায় কখন সঞ্চালন করবে। তারা কথা বলে, তথ্য আদানপ্রদান করে এবং তারা একসাথে কাজ করে, যেমনভাবে একদল গবেষক কাজ করে। ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অস্ট্রিয়া (ISTA) এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুর (NUS) এর গবেষকদের আন্তঃবিভাগীয় দল কীভাবে কোশ যোগাযোগ করে, এবং ভবিষ্যতে এটি কীভাবে কাজে লাগানো যায়, যেমন ক্ষত নিরাময়ের ক্ষেত্রে তা নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করেছেন।
ড্যানিয়েল বুকক, হ্যানেজো এবং সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সুয়োশি হিরাশিমার সাথে, একটি বিশদ নতুন তাত্ত্বিক মডেল তৈরি করেছেন, যা PRX Life জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এটি দীর্ঘ-পরিসরে কোশ-কোশ যোগাযোগ রক্ষা বুঝতে সাহায্য করে। কোশগুলি একে অপরের উপর জটিল যান্ত্রিক শক্তি প্রয়োগ করে এবং তাদের জৈব রাসায়নিক কার্যকলাপ তা বুঝতে সাহায্য করে।
দেখা যায় যদি একটি কোশ একদিকে টান দেয় অন্য কোশ সেই ক্রিয়ার সাপেক্ষে একই দিকে যায় বা বিপরীত দিকে টান দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়। এই তথ্য তরঙ্গের মাধ্যমে প্রসারিত হয় এবং বিস্তার লাভ করে, এই তরঙ্গ মাইক্রোস্কোপের নীচে দেখা যায়। কোশগুলো কেবল যান্ত্রিক টান অনুভব করে না, তাদের রাসায়নিক পরিবেশেও ক্রিয়া করে, এবং জৈব রাসায়নিক সংকেত কোশগুলো একে অপরের ওপর প্রয়োগ করে।
গবেষকরা বলেছেন, সেলুলার টিস্যু তরল স্ফটিকের ন্যায়, এটি তরলের মতো প্রবাহিত হয় কিন্তু স্ফটিকের মতো নির্দিষ্ট প্যাটার্নে সাজানো থাকে। জৈবিক টিস্যুর তরল স্ফটিক-সদৃশ আচরণ শুধুমাত্র যান্ত্রিক রাসায়নিক তরঙ্গ থেকে দেখা হয়েছে। ত্রিমাত্রিক টিস্যু বা একস্তরের কোশের সাথে জটিল আকারের কোশ অর্থাৎ প্রাণীতে যেমন দেখা যায় তা নিয়ে ভবিষ্যতে অধ্যয়ন করা প্রয়োজন। গবেষকরা কোশের এই মডেল কাজে লাগিয়ে তা ক্ষত নিরাময় করার কাজে লাগাতে চান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 5 =