ক্রনিক ব্যথার উপশমে আল্ট্রাসাউন্ড যন্ত্র

ক্রনিক ব্যথার উপশমে আল্ট্রাসাউন্ড যন্ত্র

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩১ আগষ্ট, ২০২৪

ব্যথাকে চিকিৎসকেরা একটি প্রয়োজনীয় জৈবিক সংকেত হিসেবে গণ্য করে। কিন্তু বিভিন্ন অবস্থার কারণে সেই সংকেতগুলো বিভ্রান্ত হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অনেকসময় মস্তিষ্কের গভীরে ত্রুটিপূর্ণ সংকেত উদ্ভূত হয়, যা একটি ক্ষত সম্পর্কে ভুল অ্যালার্ম দেয় কারণ ক্ষতটি আগেই নিরাময় হয়েছে অথবা অঙ্গটি আগেই কেটে ফেলা হয়েছে।
এই ধরনের ক্রনিক ব্যথায় আক্রান্ত রোগীরা ক্রমাগত নতুন চিকিৎসার বিকল্প খুঁজছেন। উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্ভবত একটি নতুন যন্ত্রের মাধ্যমে সমাধান উপস্থাপন করতে পারে। জন অ্যান্ড মার্সিয়া প্রাইস কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং স্পেন্সার ফক্স ইক্লেস স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষকরা একটি পরীক্ষামূলক থেরাপির ফলাফল প্রকাশ করেছেন যা চিকিত্সার একটি মাত্র সেশনের পরে অনেক অংশগ্রহণকারীকে স্বস্তি দিয়েছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল ‘পেন’ নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণার কেন্দ্রে রয়েছে ডায়াডেম নামের একটি নতুন বায়োমেডিকাল ডিভাইস। এই যন্ত্রটি আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে মস্তিষ্কের গভীর অঞ্চলগুলোকে কোনোরকম কাটাছেঁড়া না করেই উদ্দীপিত করে ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার সম্ভাব্য ত্রুটিপূর্ণ সংকেতগুলোকে ব্যাহত করে। পরীক্ষায় ক্রনিক ব্যথায় আক্রান্ত ২০ জন ব্যক্তিকে ডায়াডেমের আল্ট্রাসাউন্ড সিমুলেশনের ৪০-মিনিটের সেশন দেওয়া হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা গেছে রোগীদের ব্যথা হ্রাস পেয়েছে। ডায়াডেমের পদ্ধতিটি নিউরোমোডুলেশনের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এটি এমন একটি থেরাপিউটিক কৌশল যা নির্দিষ্ট মস্তিষ্কের সার্কিটের কার্যকলাপকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যান্য নিউরোমোডুলেশন পদ্ধতিগুলো ইলেক্ট্রিক কারেন্ট এবং চৌম্বক ক্ষেত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়, কিন্তু সেই পদ্ধতি মস্তিষ্কের অনেক অঞ্চলে পৌঁছাতে পারে না যেমন অগ্রবর্তী সিঙ্গুলেট কর্টেক্স। মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অঞ্চলের ধারণার জন্য একটি প্রাথমিক কার্যকরী এমআরআই স্ক্যান করার পরে, গবেষকরা ডায়াডেমের আল্ট্রাসাউন্ড নির্গমনকে ব্যবহার করেন। নেচার কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পদ্ধতিটি প্রকাশিত হয়। বর্তমানে গবেষকের দলটি ফেজ ৩ ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।