গবেষণায় প্রকাশিত প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের পুষ্টি সমতুল্য নয়

গবেষণায় প্রকাশিত প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের পুষ্টি সমতুল্য নয়

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২২ আগষ্ট, ২০২৩

পারডু ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের মতে, প্রাণিজ প্রোটিনের সম পরিমাণ উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে শরীরের জন্য অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড কম পাওয়া যায়। একটা খাবারে প্রোটিনের গুণমান শরীরের পেশি এবং পুরো শরীরের প্রোটিন তৈরির জন্য অ্যামিনো অ্যাসিড কীভাবে শরীর ব্যবহার করতে পারে তার নির্ধারক। পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডঃ ক্যাম্পবেল জানান প্রোটিন খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ এবং গুণমানের ভিত্তিতে তাদের শক্তি এবং পুষ্টি উপাদানের মধ্যে ভিন্নতা আছে। উপরন্তু, বিভিন্ন উত্স থেকে পাওয়া নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রোটিন খাবার কীভাবে শরীর হজম করে এবং ব্যবহার করে সে সম্পর্কে তথ্য সীমিত।
এর সাথে এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে বিভিন্ন ধরনের উৎস থেকে প্রোটিন গ্রহণ না করায় যেমন প্রোটিন বৈচিত্র্যের অভাব অল্প বয়সীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তেমন যারা বয়স্ক তাদের পুষ্টির চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তারা হয়তো কম প্রোটিন গ্রহণ করছেন। অতএব, বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন যে দু আউন্স প্রাণিজ বনাম উদ্ভিজ্জ প্রোটিন পুরো খাবারের অংশ হিসাবে খাওয়া হলে এই ব্যক্তিদের প্রোটিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড (EAA) জৈব ভাবে কতটা পাওয়া যায়।
৩০ জন অল্পবয়সী এবং ২৫ জন বয়স্ক সুস্থ মানুষ নিয়ে ট্রায়াল করা হয়েছিল, যেখানে তাদের হয় প্রাণিজ প্রোটিন (চর্বিহীন মাংস, সম্পূর্ণ ডিম) নয় উদ্ভিজ্জ প্রোটিন (কালো বিন, আমন্ড) তাদের নিয়মিত খাদ্যের সাথে খেতে বলা হয়েছিল। তাদের রক্তের নমুনা নেওয়া হয়েছিল এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর EAA-র জৈব উপস্থিতির সাথে রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রা দেখা হয়েছিল। দেখা গেছে দু আউন্স প্রাণিজ প্রোটিন জাতীয় খাবার ও দু আউন্স উদ্ভিজ্জ প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণের পরে প্রাণিজ খাবার যারা গ্রহণ করেছিল তাদের রক্তপ্রবাহে বেশি EAA পাওয়া যায়। এটা অল্পবয়সী এবং বয়স্ক উভয় প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছিল।
যদিও গবেষকরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রোটিনযুক্ত খাবারের প্রতিক্রিয়ায় পেশির প্রোটিন সংশ্লেষণ বা পুরো শরীরের প্রোটিন ভারসাম্যে পরিবর্তন হয় কিনা তা দেখার কোনও সরাসরি ব্যবস্থা ছিল না, কিন্তু স্বাস্থ্যকর বার্ধক্য জীবন পাওয়ার জন্য প্রাণিজ বনাম উদ্ভিজ্জ প্রোটিন খাবার কীভাবে পেশি এবং পুরো শরীরের স্বাস্থ্য প্রভাবিত করতে পারে তা আরও ভালভাবে বোঝার জন্য অতিরিক্ত গবেষণা প্রয়োজন। এই গবেষণার ফলাফল জনস্বাস্থ্য পুষ্টি নির্দেশিকায় প্রভাব ফেলতে পারে এবং ভবিষ্যতে প্রোটিন খাবারের গ্রুপে বিভিন্ন প্রোটিন উৎসের সমতুল্যতা পুনঃমূল্যায়ন করে সেই অনুযায়ী নির্দেশিকা ঠিক করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 1 =