গ্লোবাল ওয়ার্মিং বাড়াচ্ছে নাইট্রাস অক্সাইড

গ্লোবাল ওয়ার্মিং বাড়াচ্ছে নাইট্রাস অক্সাইড

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৪ জুন, ২০২৪

বাতাসে নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমনের প্রধান কারণ হল কৃষিকাজ, নাইট্রোজেন-ভিত্তিক সার এবং পশুর বর্জ্যের জন্য এই গ্যাস তৈরি হয়ে থাকে। এক গবেষণায় বলা হচ্ছে শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস নাইট্রাস অক্সাইডের তীব্র বৃদ্ধি প্রত্যাশার বাইরে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে বাধা দিচ্ছে। যথেষ্ট উদ্বগের বিষয় হল এই গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য বিশেষ কাজ করা হচ্ছেনা। প্রধানত তিনটে গ্রিনহাউস গ্যাস বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী, কার্বন ডাই অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, মিথেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন নাইট্রাস অক্সাইড পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়ে ৩০০ গুণ বেশি উত্তপ্ত করতে পারে, আর এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে তা বায়ুতে থাকতে পারে। বিগত চার দশক যাবত এর নির্গমন বাড়ছে। ২০২২ সালে দেখা গেছে বায়ুমণ্ডলে এর মাত্রা ৩৩৬ পার্টস পার মিলিয়ন, যা শিল্পযুগ শুরুর আগের বাতাসের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। বস্টন কলেজের গবেষকদের মতে আই পি সি সি-র বেধে দেওয়া সীমার তুলনায় এটা অনেক বেশি। গবেষকদের বক্তব্য গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাতে প্যারিস সম্মেলনে বেধে দেওয়া ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আটকে রাখার জন্য নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমনে রাশ টানতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষিই মুখ্য অপরাধী, নাইট্রাস অক্সাইড উৎপাদনের প্রায় তিন-চতুর্থাংশের জন্য কৃষিকাজ দায়ী। অন্যান্য উৎপাদনের ক্ষেত্র হল জীবাশ্ম জ্বালানি, বর্জ্য এবং বর্জ্য জল এবং জৈব পদার্থ পোড়ানো। অন্যান্য গ্যাসের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের পলিসি থাকলেও, নাইট্রাস অক্সাইড নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এখনও বিশ্বব্যাপী কোনো পলিসি নেওয়া হয়নি। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ৬.৪% -এর জন্য নাইট্রাস অক্সাইড দায়ী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, রাশিয়া, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমনে শীর্ষে আছে। তাদের দ্রুত বর্ধমান জনসংখ্যা আর খাদ্য খাতে চাহিদা বৃদ্ধি এর পেছনে দায়ী। ইউরোপ আগে সব থেকে বেশি এই গ্যাস নির্গমন করত, কিন্তু তারা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার খুব কমিয়ে দেওয়াতে, কৃষিতেও পরিবর্তন আনাতে এই গ্যাস নির্গমন হ্রাস পেয়েছে। এই গ্যাস নির্গমন কমাতে পলিসি নিলেও তা কার্যকরী হতে বছর দশেক সময় লাগবে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। তবে আশার কথা বেশ কিছু কৃষক সঠিক মাত্রায় সার ব্যবহারে করে, জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারড বীজ ও পশু বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা করার মাধ্যমে নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করছেন।