চাঁদের মাটি খুঁড়ে ‘বিশেষ’ নমুনা নিয়ে ফিরছে চ্যাং-ই ৬

চাঁদের মাটি খুঁড়ে ‘বিশেষ’ নমুনা নিয়ে ফিরছে চ্যাং-ই ৬

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৯ জুন, ২০২৪

চিনের সবচেয়ে বড়ো রকেট ‘লং মার্চ-৫’ চেপেই দেশের দক্ষিণে হায়নান দ্বীপের ‘ওয়েনচ্যাং স্পেস লঞ্চ সেন্টার’ থেকে ৩রা মে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল চিনের চন্দ্রযান চ্যাং’ই-৬। কথা ছিল চাঁদের সুদূরতম প্রান্তে, দক্ষিণ মেরুর অ্যাটকেন বেসিনে অবতরণ করে সেখান থেকে মাটি ও পাথর সংগ্রহ করে তার দেশে ফিরিয়ে আনবে গবেষণার উদ্দেশ্যে। চাঁদের এই অংশ পৃথিবী থেকে দেখতে পাওয়া যায় না। চাঁদের দূরতম ওই প্রান্ত এখনও মানুষের চোখে এক রহস্যময় স্থান। চিনের ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে চ্যাং’ই-৬ চন্দ্র অনুসন্ধান মিশন সম্পূর্ণ সফল হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালে চাঁদের যে অংশে এখনও মানবজাতির পা পড়েনি, সেই অঞ্চল থেকেই পাথুরে মাটি নিয়ে আসে চ্যাং’ই ৫। চাঁদের যে অংশ কৃষ্ণবর্ণ, সেখানেই নেমেছিল চিনের এই যান। নাসার মতে, এই অঞ্চলে বিরাট অংশ জুড়ে এক সময় লাভা উদ্গীরণ হয়েছিল। বহু যুগ আগে ম্যাগমার সমুদ্র বয়ে যাওয়ার ফলে ওই জায়গা কৃষ্ণবর্ণের হয়ে যায়। গবেষকদের কাছে এই অঞ্চল থেকে পাওয়া পাথর এবং পাথুরে মাটির গুরুত্ব অপরিসীম। এই চ্যাং’ই ৫- এর ফ্লাইট প্ল্যান অনুসরণ করেই চ্যাং’ই-৬-এর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। চ্যাং’ই-৬-এর ল্যান্ডারটি তার যাত্রাপথে নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে একটি অনবোর্ড ড্রিল এবং রোবোটিক হাত ব্যবহার করেছিল। রেডন ডিটেক্টর, নেগেটিভ-আয়ন ডিটেক্টর এবং একটি মিনি-রোভারের সাহায্যে চন্দ্রযানটি তার আশেপাশের তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং উপগ্রহের মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করেছে। নমুনা সংগ্রহের পরে তা রিএন্ট্রি ক্যাপসুলে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, এবং মহাকাশযানটি চাঁদের কক্ষপথ ছেড়ে পৃথিবীতে ফিরে আসার যাত্রা শুরু করে। ৩-রা জুন সেই দু’কেজি ওজনের চন্দ্রপদার্থ নিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে রওনা হয় চন্দ্রযান। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে উত্তর চিনের মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে অবতরণ করে চিনের চন্দ্রযান। বিজ্ঞানীদের অনুমান নমুনাগুলোতে ২.৫ মিলিয়ন বছরের পুরানো আগ্নেয় শিলা এবং অন্যান্য উপাদান রয়েছে যা চাঁদের দুই পক্ষের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণে সাহায্য করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 4 =