চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার

চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ জুন, ২০২৪

প্রযুক্তির অগ্রগতির ছাপ পড়েছে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও। সাম্প্রতিককালে বহু অস্ত্রোপচারে রোবটের ব্যবহার হয় আবার সেন্সরের সাহায্যে শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলো আমরা নিরীক্ষণ করতে পারি আবার অন্যদিকে কম্পিউটরের মাধ্যমে বাস্তব পরিস্থিতি তৈরি করে ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মেডিকেল টেকনোলজির লক্ষ্য হল এমন ডিভাইস বা যন্ত্র তৈরি করা যা শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নির্দিষ্ট অঙ্গের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে পারে। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকরা সম্প্রতি একটি নতুন ইনজেস্টেবল ডিভাইস তৈরি করেছেন যা ব্যবহারকারীদের পৌষ্টিক নালীর ইলেক্ট্রোফিজিওলজিকাল সংকেত রেকর্ড করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। নেচার ইলেকট্রনিক্সে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে এই যন্ত্রটির সাহায্যে চিকিৎসকরা খাদ্য বস্তুর হজমকে প্রভাবিত করে এমন ব্যাধির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে ও তা নির্ণয় করতে পারবে। গবেষকদের মতে পৌষ্টিক নালী এবং অন্ত্রের স্নায়ুতন্ত্র থেকে উচ্চ-মানের ইলেক্ট্রোফিজিওলজি তথ্য রেকর্ড করা হলে বিভিন্ন ধরনের ব্যাধি শনাক্ত করা এবং প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করা সম্ভব। তবে, এই ধরনের পরিমাপ চ্যালেঞ্জিং কারণ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শরীরে ইলেক্ট্রোড রোপণ করতে হয় বা ত্বকে পরিধান করতে হয়, ফলে সিগন্যালের গুণমানে প্রভাব পড়ে। তাই গ্যাস্ট্রিক ইলেক্ট্রোফিজিওলজির তথ্য রেকর্ডের জন্য তারা একটি ইনজেস্টেবল ডিভাইস ব্যবহারের সুপারিশ করেন। অন্ত্রের স্নায়ু তন্ত্র লক্ষাধিক স্নায়ুকোশ ও কোশের সমন্বয়ে গঠিত যা পৌষ্টিক তন্ত্রে হরমোন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে। পৌষ্টিক নালীর বিভিন্ন ব্যাধি এই স্নায়ু কোশের বৈদ্যুতিক সংকেতের ত্রুটির জন্য হয়ে থাকে। পৌষ্টিক নালীর কোশের বৈদ্যুতিক সংকেত চিহ্নিত করার মাধ্যমে চিকিৎসকরা বিভিন্ন ব্যাধি নির্ণয় করতে, তাদের কারণ বুঝতে এবং নির্দিষ্ট রোগীর উপর ভিত্তি করে চিকিত্সার কৌশলগুলো তৈরি করতে পারবেন। গবেষকদের তৈরি করা ইনজেস্টেবল ডিভাইসটি অন্ত্রের বৈদ্যুতিক সংকেত রেকর্ড করে রোগীর শরীরের বাইরে একটি রিসিভারে পাঠাতে পারে, ফলত কোনো অস্ত্রপচার ছাড়াই চিকিৎসকেরা অন্ত্রের রোগের কারণ চিহ্নিত করতে সক্ষম হবেন।