
পাহাড়ে এবং সমুদ্রতলের ঘড়ি বিভিন্ন গতিতে চলে, কিন্তু সময় সম্পর্কে এটাই কি আমাদের চূড়ান্ত চিন্তার বিষয়? নদীতে, পাড়ের দিকে জলের স্রোত আস্তে প্রবাহিত হয়, মাঝখানে বেশি গতিতে যায় – কিন্তু প্রবাহিত হয় ……… সময়ও কি এইরকম কিছু যা অতীত থেকে ভবিষ্যতে সবসময় প্রবাহমান? আমরা আপাতত, কতটা সময় ব্যয় হয় – সেটা পাশে সরিয়ে রেখে, সময়ের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এখন আলোচনা করবঃ এর চলাচল, এর প্রবাহ, এর চিরন্তন গতি।
অতীত এবং ভবিষ্যৎ পরস্পরের থেকে আলাদা। কারনের জন্যই ফলাফল হয়। কোন ক্ষতের পরেই ব্যথা আসে, আগে না। গ্লাসভেঙ্গে টুকরো টুকরো কাঁচে পরিণত হয়, কিন্তু কাঁচগুলোকে জোড়া দিয়ে আবার গ্লাসে পরিণত করা যায় না। অতীতকে আমরা পালটাতে পারব না। আমাদের স্মৃতি, অনুতাপ, অনুশোচনা, ইত্যাদি নিয়েই বেঁচে থাকি। অন্যদিকে ভবিষ্যৎ — অনিশ্চয়তা, ইচ্ছে, উদ্বিগ্নতা, খোলা জায়গা, ভবিতব্য, হয়ত – এইসব নিয়ে। আমরা এর দিকে তাকিয়েই বেঁচে থাকি, ভবিষ্যতের কোন অস্তিত্ব নেই বলে একে আকার দেবার চেষ্টা করি। সবকিছুই সম্ভব ……… সময় দুইদিকে সমানভাবে যাবে এমন কোন রেখা নাঃ বিভিন্ন প্রান্তসীমার মধ্যে একটা তীরের মতো।
অতীত → ভবিষ্যৎ
এবং এটাই, অর্থাৎ দিগ্নির্দেশক, সময়ের গতির চাইতে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের এটাই সবচেয়ে প্রাথমিক ব্যাপার। সময়ের পিছলে যাবার মধ্যেই গোপনীয়তা রয়েছে, যেখানে আমরা আমাদের নাড়ির স্পন্দন বুঝতে পারি, স্মৃতির রহস্যময়তা এবং ভবিষ্যতের জন্য চিন্তা। সময় নিয়ে চিন্তার ব্যাপার বোধহয় এইগুলোই। কি প্রবাহিত হচ্ছেঠিকঠাকভাবে? পৃথিবীর ব্যাকারনে এটা কোথায় বাস করে? পৃথিবীর বিভিন্নধরনের প্রক্রিয়ার এমনকি আছে যা অতীতেরঅস্তিত্বের সাথে ভবিষ্যতের অনস্তিত্বকে তফাৎ করে? আমাদের কাছে অতীত ভবিষ্যৎ থেকে তফাৎ কেন?
উনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা এইসব প্রশ্ন নিয়ে নাড়াচাড়া করেছিল, এমন কিছু তত্ত্ব উঠে এসেছিল যা অচিন্তনীয় এবং বিরক্তিকর। সময় বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন গতিতে চলে – এই প্রান্তিক তত্ত্ব থেকে এই তত্ত্বগুলো অনেক দূরে। প্রকৃতপক্ষে, প্রাথমিক সুত্রে যা মহাবিশ্বেরবিভিন্ন প্রক্রিয়া বর্ণনা করে, সেখানে, অতীত এবং ভবিষ্যতের, স্মৃতি এবং আশার, অনুশোচনা এবং ইচ্ছে – এদের মধ্যে কোন তফাৎ নেই।