ছোটোবেলার বন্ধুর জিনের প্রভাব আমাদের স্বাস্থ্যে

ছোটোবেলার বন্ধুর জিনের প্রভাব আমাদের স্বাস্থ্যে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ছোটোবেলার বন্ধু

আমাদের বন্ধু, আমরা যাদের সাথে ঘোরাঘুরি করি, সময় কাটাই তাদের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যাজনিত উচ্চ জেনেটিক ঝুঁকি থাকলে, তা আমাদের মধ্যে চলে আসার সম্ভাবনা থাকে। আমাদের জিনগতভাবে একই ঝুঁকি না থাকলেও বন্ধুদের রোগ আমাদের মধ্যে বিকাশের সম্ভাবনা থাকে। একথা রাটগার্স ইউনিভার্সিটির মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। রাটগার্স ইউনিভার্সিটির জেসিকা সালভাতোর বলেছেন, মানসিক অসুস্থতা এবং নেশার দ্রব্য বন্ধুরা ব্যবহার করলে আমাদের যুবক বয়সে একইভাবে নেশাসক্তি হওয়ার জেনেটিক প্রবণতা তৈরি হয়। সুইডিশ স্বাস্থ্য রেজিস্ট্রির ৬৫০০০০ তথ্যের রেকর্ড ঘেঁটে গবেষকরা ১৭ থেকে ৩০ বছর বয়সী ব্যক্তি আর তাদের বর্ধিত পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এর তথ্য থেকে গবেষকরা কম বয়সে নেশার দ্রব্য ব্যবহার আর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি ম্যাপিং করে, অংশগ্রহণকারীদের পারিবারিক জেনেটিক ঝুঁকির স্কোর নির্ধারণ করেছেন।
অবস্থান এবং স্কুলের তথ্যের সাপেক্ষে, গবেষকরা স্কুলের বন্ধুদের ও স্থানীয় বন্ধুদের অনুরূপ অভিজ্ঞতার জেনেটিক ঝুঁকির স্কোর, ও প্রবণতা অনুসন্ধান করেছিলেন। গবেষকরা জানিয়েছেন, তাদের তথ্য সামাজিক জেনেটিক প্রভাবের মধ্যে সম্পর্কের দীর্ঘ অস্তিত্ব জানান দেয়। গবেষণার এই নতুন সোসিও-জেনোমিক ক্ষেত্র দেখায় একজনের জেনোটাইপ কীভাবে অন্যদের বৈশিষ্ট্যকে প্রভাবিত করতে পারে। কীভাবে এই বৈশিষ্ট্য তার প্রভাব বিস্তার করে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ড্রাগ ব্যবহারজনিত অসুস্থতা, অ্যালকোহলজনিত অসুস্থতা, হতাশা, উদ্বিগ্নতা এই বিষয়গুলো গবেষণার আওতাভুক্ত ছিল। বন্ধুদের মধ্যে নেশাজাত দ্রব্য ব্যবহারজনিত অসুস্থতার প্রভাব সবচেয়ে বেশি (৫৯% ) দেখা গেছে। এই প্রভাব ১৬-১৯ বছরে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। তবে এর কারণে ঘটা শারীরিক অসুস্থতা পরবর্তী জীবনে দেখা গেছে। সমবয়সীদের জেনেটিক প্রবণতা টার্গেট ব্যক্তিদের ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনার সাথে যুক্ত। সমবয়সী কোনো বন্ধুর জিনে নেশাসক্তি থাকলেও, সে হয়তো নেশায় তখন আসক্ত নয়, কিন্তু অপর বন্ধুর জিনে এই নেশাসক্তির প্রবণতা দেখা যেতে পারে। বন্ধুদের সাথে দলে পড়ে নেশায় আসক্ত হওয়ার বাইরেও জৈবিকভাবে দেহের অভ্যন্তরে বন্ধুর জেনেটিক প্রভাব পড়ে। এই গবেষণা আমেরিকান জার্নাল অফ সাইকিয়াট্রি-তে প্রকাশিত হয়েছে।