জলের আর এক নাম জীবন

জলের আর এক নাম জীবন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ অক্টোবর, ২০২৪

 

আমাদের শরীরের ৭০% জল। তাই জল পান করা শরীরের জন্য আবশ্যক। জল শরীরের তাপমাত্রা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, শরীরের বর্জ্য এবং বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশন করে। এছড়াও আমাদের অস্থিসন্ধিগুলো পিচ্ছিল করে নড়াচড়ায় সাহায্য করতে, মেরুদন্ডের সুস্থতা বজায় রাখতে জলের বড়ো ভূমিকা রয়েছে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ৩.৭ লিটার জল আর একজন মহিলার ২.৭ লিটার জল রোজ পান করা দরকার। এর মধ্যে চা বা শরবত থাকতে পারে। শরীরে জলের অভাব হলে তৃষ্ণা পায়, তার সাথে মূত্রের রঙ হলুদ হয়, ক্লান্তি, ঘুম ভাব, গলা শুকিয়ে যাওয়া এগুলো দেখা যায়। ভালো উপকার পেতে গেলে, সারা দিনে কখন জল পান করা হবে তা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মতো গরম আর্দ্র জলবায়ুতে ঘাম বেশি হয়, তাই বেশি জল পান করা জরুরি। জ্বর বা ডায়োরিয়া হলেও শরীরে জলের চাহিদা বাড়ে। গর্ভবতী মহিলা বা স্তন্যপান করাচ্ছেন এরকম মায়ের নিজের ও সন্তানের শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে বেশি জল পান করা প্রয়োজন।
সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে একগ্লাস জল দিয়ে দিন শুরু করলে সারা রাতের ঘুমের পর শরীরের জলের চাহিদা পূর্ণ হবে আর বিষাক্ত দ্রব্য সহজেই নিষ্কাশিত হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর এক গ্লাস জল পান করা একবারে অনেকটা পরিমাণে জলপানের তুলনায় ভালো। খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে এক গ্লাস জল আমাদের হজমে সাহায্য করে, অতিরিক্ত খাওয়া প্রতিহত করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খাবার সময় অল্প জল পান করলে হজমে সাহায্য হয়। তবে বেশি জল পাচকরসের ঘনত্ব লঘু করে দেয়। খাবার খাওয়ার একঘণ্টা পরে জল পান করলে শরীরে পুষ্টি শোষণ ভালোভাবে হয়। স্নান করার আগে এক গ্লাস জল আমাদের রক্তচাপ কমায়। ব্যায়ামের সময় শরীর থেকে যে ঘাম নির্গত হয়, তা পূরণ করতে জল বা ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় গ্রহণ ভালো। সন্ধ্যার পর জল পান কমানো ভালো, তা নাহলে রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। শুতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে এক গ্লাস জল পান করলে শরীরে জলের চাহিদা পূর্ণ থাকবে। আমাদের মস্তিষ্কের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ তরল, তাই শরীরে জলের অভাব হলে মস্তিষ্কের রক্তনালীগুলো সঙ্কুচিত হয়। এই কারণেই মানুষ অলস বোধ করে, তার ফোকাস ও স্ট্যামিনার অভাব দেখা যায়।