জাপানের কম্পনপ্রবণ অঞ্চলে প্লেট সংঘর্ষের ভ্রূকুটি

জাপানের কম্পনপ্রবণ অঞ্চলে প্লেট সংঘর্ষের ভ্রূকুটি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ভারী থেকে মাঝারী মাত্রার ভূমিকম্পে বারবার কেঁপে উঠেছে জাপান ও তার আশেপাশের দ্বীপপুঞ্জগুলি। ১৯৪৪ সালে দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ কম্পনটি অনুভূত হয়, এবং প্রায় ১২০০ জন মানুষের মৃত্যু ঘটে ও অগণিত সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি ঘটে।

মূলত ঘন জনবসতিপূর্ণ হন্সু দ্বীপ’ই সর্বাধিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। হন্সু দ্বীপের নীচেই প্লেট টেক্টনিকের মারাত্মক পরিচলনের দরুন উদ্ভূত অনিয়ন্ত্রিত শক্তি, যা সাবডাকশন নামে পরিচিত, ধ্বংসের মূল কারণ।

প্লেটের মধ্যে পারস্পরিক চলনের ফলে প্রচুর পরিমাণে ঘর্ষণজাত ক্ষমতার উৎপত্তি হয়, ভূমিকম্পের  মূল কারণ এটাই।  অকস্মাৎ চাপমুক্তিই প্লেটের মধ্যে ভয়াবহ কম্পনের সৃষ্টি করতে সক্ষম। ইন্টারন্যাশানাল ইন্সটিটিউট ফর কার্বন-নিউট্রাল এনার্জি রিসার্চ-এর অধীনে সম্পাদিত এই গবেষণাপত্রে মূলত জোর দেওয়া হয়েছে প্লেট টেক্টনিকের অন্দরে তৈরি হওয়া চাপের উপরেই। গবেষণাপত্রটি কিছুদিন আগেই আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্স লেটার্স-এ প্রকাশিত হয়েছে।

মুখ্য গবেষক টাকেশি সুজি বলছেন, প্লেট সীমানার গতিশীল চরিত্রগুলি আরও বিকশিত হয়েছে ইতিমধ্যেই, যোগ করেছেন তিনি, সমকম্পনমাত্রার অঞ্চলগুলিতে উৎপন্ন ঘর্ষণ এবং চাপের দরুনই বিপত্তি ঘটতে পারে।

নানকাই খাতের পুঙ্খানুপুঙ্খ দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক কম্পনচিত্র প্রকাশ করেছে গবেষক দল। খাতে জমা হওয়া পাথর ও অন্যান্য পাতিত পদার্থ-এর উপস্থিতিতে তাঁরা তৈরি করেছেন বিশেষ প্রিসম আকারের মডেল।

দীর্ঘদিন ধরে জমা হওয়া এই উপাদানগুলির চাপেই সাবডাকশন সংঘটিত হয়- ১৯৪৪ সালে তোনাকাই-কে বিধ্বস্ত করে দেওয়া মারণ ভুমিকম্পের কারণস্বরূপ উঠে এসেছে এমনই নেপথ্য কারণ। ২০১৬ সালের পয়লা এপ্রিলও এই একই স্থান ফের কেঁপে ওঠে।

গবেষকদের মতে, ১৯৪৪ সালে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পও কিছুটা অবশ্যই দায়ী নতুন করে সমস্ত কম্পনের জন্যই। এই নানকাই খাতে ভবিষ্যতে আরও ভূকম্পনের আশঙ্কা করেছেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা।