তিমির জীবনকাল দ্বিগুণ হতে পারে, জানাচ্ছে গবেষণা

তিমির জীবনকাল দ্বিগুণ হতে পারে, জানাচ্ছে গবেষণা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত এক নতুন গবেষণা অনুসারে সাউদার্ন রাইট হোয়েল নামে একপ্রজাতির তিমিদের জীবনকাল ১০০ বছরেরও বেশি এবং এদের মধ্যে ১০%, ১৩০ বছর ধরে বেঁচে থাকতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণে, দক্ষিণ মহাসাগরের জলে একসময় এই প্রজাতির তিমি প্রচুর পরিমাণে দেখা যেত কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে তিমি শিকারের কারণে এদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। এদের মাংস ও শরীরে তেলের কারণে শিকারীরা এই তিমি শিকার করা ঠিক বা ‘রাইট’ মনে করত, তাই এই নামকরণ। এদের মধ্যে আবার কিছু তিমি হয়তো ১৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। আগে ভাবা হত এই তিমিদের জীবনকাল মাত্র ৭০ থেকে ৮০ বছর কিন্তু বর্তমান অধ্যয়নে যা দেখা গেছে এই প্রজাতির তিমিদের বেঁচে থাকার সময়কাল তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। উত্তর আটলান্টিকে যে তিমি দেখা যায় তাদের জীবনকালও প্রায় ৭০ বছর বলে মনে করা হয়। তবে, গবেষণায় দেখা গেছে যে এই বিপন্ন প্রজাতির বর্তমান গড় আয়ু মাত্র ২২ বছর, এবং খুব কম সংখ্যকই ৫০ বছর অতিক্রম করে। তিমির এই দুটি প্রজাতি খুব ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত – মাত্র ২৫ বছর আগে এই দুটি একটি প্রজাতি হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল – তাই গবেষকরা মনে করেছেন এদের জীবনকাল একই হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তবে উত্তর আটলান্টিকের এই তিমির মৃত্যুর জন্য দায়ী মূলত মানুষ, কারণ এদের বেশিরভাগের মৃত্যু ঘটে মাছ ধরার গিয়ার এবং জাহাজের আঘাতে। গবেষকরা মনে করেন বন্য প্রাণীরা কতদিন বেঁচে থাকে তা জানা প্রয়োজন, তবেই তাদের রক্ষা করার প্রকৌশল ঠিক করা সম্ভব। দেখা গেছে যেসব প্রাণীর জীবনকাল বেশি তাদের প্রজনন সাধারণত অত্যন্ত ধীরে ঘটে। তাই এদের সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার কৌশলগুলো সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যাশিত প্রভাবের কারণে এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তিমি শিকার বর্তমান তিমির সংখ্যাকে কমিয়ে দিয়েছে এবং গবেষকদের অনুমান আবার আগের সংখ্যায় ফিরে আসতে হয়তো আরও ১০০ বছর লেগে যেতে পারে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে উত্তর আটলান্টিক তিমিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে তিমিরা অনেক কম বয়সে মারা যাচ্ছে।