দায়ী নয় কুখ্যাত উল্কাপাত, তার আগে থেকেই অবলুপ্তির পথে ডাইনোসর

দায়ী নয় কুখ্যাত উল্কাপাত, তার আগে থেকেই অবলুপ্তির পথে ডাইনোসর

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

ডাইনোসরের মতো দানবীয় প্রাণীর ধ্বংস নিয়ে জীবাশ্মবিদ্যার অপার কৌতূহল। এতদিন মনে করা হত আজ থেকে ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে এক ভয়াবহ উল্কার আঘাতেই বুঝি ডাইনোদের বংশ লুপ্ত হয়েছিল। কিন্তু মধ্য চীনে খুঁজে পাওয়া ডাইনোসরের জীবাশ্মীভূত ডিমের খোলক খুঁজে পেয়ে এই তত্ত্ব খারিজ হওয়ার মুখে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট নামের পত্রিকায় সম্প্রতি এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাপত্রের মুখ্য বিজ্ঞানী কিয়াং ওয়াং জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক নিয়মেই কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে অবলুপ্ত হয়েছে ডাইনো প্রজাতি। তাতে উল্কাপাতের কোনও যোগ নেই। কিয়াং ওয়াং বর্তমানে চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সে গবেষণার কাজে যুক্ত রয়েছেন।
নতুন এই অনুসন্ধানে নৃতত্ত্ববিদরাও অংশ নিয়েছিলেন। সাথে অবশ্যই ছিলেন একদল প্রত্নবিশারদ। ওনাদের মতে, ডাইনোসরের জাতিবৈচিত্র্য কমতে শুরু করেছিল অনেক আগে থেকেই। তারপর ক্রেটাশিয়াস যুগের শেষদিকে এসে একেবারেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় তারা। তখন পাখী ছাড়া তাদের অন্য কোনও উত্তরসূরি বাকি ছিল না।
অনেকগুলো ডিমের জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েই এই সিদ্ধান্তে এসেছেন চীনদেশের বিজ্ঞানীরা। আনুমানিক ৬৮.২ থেকে ৬৬.৪ মিলিয়ন বছরের পুরনো গোটা বা ভাঙা ডিমের খোলকগুলো ডাইনোসরের বিলুপ্তির ঠিক আগেকার সময়ের। যে জায়গা থেকে ডাইনোর ডিমের নমুনা মিলেছে, সেটা শানইয়াং অববাহিকা। ক্রেটাশিয়াস যুগের অন্তিম পর্যায়ে ডাইনোসরের বিপুল জীবাশ্ম নমুনা এই অঞ্চল থেকেই খুঁজে পেয়ে এসেছেন প্রত্নতাত্ত্বিক মহল। কিন্তু ডিমের বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারছেন, মাত্র তিন ধরণের ডাইনোসরের উপস্থিতি ঐ সময় ছিল। অর্থাৎ, প্রজাতির বেশিরভাগটাই তদ্দিনে অবলুপ্ত হয়ে গেছে।
চায়না ইউনিভার্সিটি অফ জিওসায়েন্সের গবেষক ফেই হান বলছেন, নতুন গবেষণার ফলাফলে কোনও আকস্মিক উল্কাপাতে ডাইনোসর বিলুপ্তির ধারণাকে খারিজ করা হয়েছে। বরং স্বাভাবিক বিবর্তনের পথেই তারা পৃথিবী থেকে ক্রমে মুছে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three − 2 =