দুরন্ত গতিতে অ্যান্টার্কটিকায় সবুজায়ন বাড়ছে

দুরন্ত গতিতে অ্যান্টার্কটিকায় সবুজায়ন বাড়ছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১০ অক্টোবর, ২০২৪
অ্যান্টার্কটিকা

বিশ্ব উষ্ণায়নে সবচেয়ে আগে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শীতলতম স্থান। এই স্থান সবচেয়ে তাড়াতাড়ি তার শীতলতা হারাচ্ছে। যার ফলে হিমবাহ গলছে, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে। ঠিক একইভাবে অ্যান্টার্কটিকা বিশ্বের অন্যান্য স্থানের তুলনায় বেশি উষ্ণ হচ্ছে। যার ফলে অ্যান্টাকর্টিকায় সবুজায়ন দশগুণ বেড়ে গেছে। এক্সেটার এবং হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপে কতটা প্রভাব পড়েছে, তার মূল্যায়ন করতে স্যাটেলাইট ডেটা ব্যবহার করে এখানকার ‘সবুজ’-এর তথ্য নেওয়া হয়েছে। দেখা গেছে ১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপ জুড়ে গাছপালার আচ্ছাদন এক বর্গ কিলোমিটারের কম ছিল, যা ২০২১ সালের মধ্যে বেড়ে প্রায় ১২ বর্গ কিলোমিটার জায়গা দখল করেছে। নেচার জিয়োসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় জানানো হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এই সবুজায়নের মাত্রা ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে প্রতি বছরে ৪০০০০০বর্গ মিটার স্থান সবুজ হয়ে যাচ্ছে।
উপগ্রহ চিত্র ব্যবহার করে গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন, অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপ জুড়ে ব্যাপক সবুজায়ন প্রবণতা চলছে আর তা ত্বরান্বিত হচ্ছে। এক্সেটার ইউনিভার্সিটির ডঃ টমাস রোল্যান্ড বলেন, অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপে যে গাছপালা দেখতে পাওয়া যায়, তা হল মস যা খুব কঠিন পরিস্থিতিতেও বেঁচে থাকতে পারে। এই অঞ্চল এখনও প্রায় সম্পূর্ণরূপে তুষার, বরফ, শিলায় আবৃত। শুধুমাত্র ক্ষুদ্র অঞ্চলে উদ্ভিদের উপনিবেশ দেখা যায়। কিন্তু সেই ক্ষুদ্র অংশ অকস্মাৎ বৃদ্ধি পেয়েছে আর তার বৃদ্ধি অব্যহত। তারা দেখেছেন, এই বিশাল বিচ্ছিন্ন ‘মরুভূমি’ নৃতাত্ত্বিক কারণজনিত জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাবিত হচ্ছে। গবেষকরা মনে করছেন, এই বাস্তুতন্ত্র যত প্রতিষ্ঠিত হবে আর জলবায়ু উষ্ণ হতে থাকবে, সবুজায়ন বাড়তে থাকবে। অ্যান্টার্কটিকাতে মাটি প্রায় নেই, কিন্তু গাছপালা থেকে এখানে জৈবপদার্থ বাড়তে থাকবে, যার থেকে মাটি তৈরি হওয়া শুরু হবে। আর গাছের পরিমাণও বাড়তে থাবে। এর থেকে বহিরাগত আগ্রাসী প্রজাতির আবির্ভাব ঘটবে। আর তা ঘটবে বিজ্ঞানী, পর্যটকদের মাধ্যমে। সবুজায়ন প্রবণতার জন্য দায়ী এমন জলবায়ু ও পরিবেশগত প্রক্রিয়াগুলো প্রতিষ্ঠার জন্য আরও গবেষণা জরুরি বলে গবেষকরা মনে করছেন। অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলের এই পরিবর্তন পরিবেশের পক্ষে বিশেষ উদ্বেগজনক। অ্যান্টার্কটিকা রক্ষার জন্য এই পরিবর্তন ও তার কারণ জানা দরকার।