দেয়ালের রঙ থেকে ক্ষতি

দেয়ালের রঙ থেকে ক্ষতি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৭ এপ্রিল, ২০২৪

নিজের সাধের গৃহকোণ মনের মতো করে রঙ করতে আমরা সবাই চাই। আর বাড়ি রঙ করার পেইন্ট অনেকগুলো বিকল্প নিয়ে আসে: কী ধরনের পেইন্ট, কী ধরনের ফিনিস এবং কী রঙ? জল-ভিত্তিক পেইন্ট, দ্রাবক-ভিত্তিক বিকল্পের তুলনায় অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব বা “গ্রিনার” এবং কম গন্ধযুক্ত। এবং বলা হয় এই জলভিত্তিক রঙে প্রায়শই সামান্য বা কোনো উদ্বায়ী জৈব যৌগ বা ভোলাটাইল অরগ্যানিক কম্পাউন্ডস (VOCs) থাকে না। কিন্তু, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি লেটার্সে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, এই পেইন্টগুলোর মধ্যে কিছু যৌগ রয়েছে যা উদ্বেগের এবং কিছু উদ্বায়ী জৈব যৌগও রয়েছে।
রঙ বা পেইন্ট চারটি উপাদান নিয়ে গঠিত: রঞ্জক, বাইন্ডার, অ্যাডিটিভ বা সংরক্ষণের জন্য কিছু সংযোজন এবং একটি তরল। ল্যাটেক্স এবং কিছু এক্রাইলিক পেইন্টের মতো যদি তরলটি জল হয় তবে তা জল-ভিত্তিক পেইন্ট হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। তবে দ্রাবক-ভিত্তিক পেইন্ট প্রয়োগ করা সহজ এবং টেকসই, যদিও প্রয়োগের সময় এবং পরে উভয় ক্ষেত্রেই এগুলো বাতাসে দুর্গন্ধযুক্ত VOC নির্গত করে। এই বায়ুবাহিত VOC বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে যেমন শ্বাসকষ্ট বা মাথাব্যথা। জল-ভিত্তিক পেইন্টগুলোতে যদিও বলা হয় উদ্বায়ী জৈব যৌগ নেই বা থাকলেও খুবই সামান্য তবে তাদের মধ্যে কিছু বিপজ্জনক রাসায়নিক থাকতে পারে। গবেষকের দল বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সর্বাধিক বিক্রিত ব্র্যান্ডের মধ্যে ৪০টি জল-ভিত্তিক পেইন্ট সংগ্রহ করেছে এবং তাদের উপাদান নির্ধারণ করতে শুষ্ক এবং সিক্ত উভয় অবস্থার নমুনা গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি-মাস স্পেকট্রোমেট্রি দ্বারা বিশ্লেষণ করেছে। গবেষকরা দেখেছেন বায়বীয় আকারে না হলেও প্রায়শই ধুলোতে মিশে এগুলো বছরের পর বছর ধরে গৃহের অভ্যন্তরে টিকে থাকতে পারে। এছাড়াও পরীক্ষিত রঙে বাইন্ডার হিসাবে কাজ করে এমন বেশ কয়েকটি রাসায়নিক যা থ্যালেটের বিকল্প হতে পারে শনাক্ত করা হয়েছে – তাদের বিষাক্ততা এখনও মূল্যায়ন করা হচ্ছে। বিশ্লেষিত প্রায় অর্ধেক নমুনায় পরিমাপযোগ্য পরিমাণে আইসোথিয়াজোলিনোনস রয়েছে যা ত্বকে জ্বালাভাব এবং হাঁপানির উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। শূন্য- বা নিম্ন-ভিওসি হিসাবে চিহ্নিত ওয়েট পেইন্টে, প্রতি মিলিয়নে ২০,০০০ অংশ পর্যন্ত ঘনত্বে ১১টি ভিন্ন ভিওসি শনাক্ত করা হয়েছে। গবেষকরা আরও বলেছেন দেয়ালে করা রঙ শুকিয়ে গেলে এই বিপজ্জনক যৌগগুলো কতটা বায়ুবাহিত তা বোঝার জন্য আরও অধ্যয়নের প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 16 =