নকল-নবিশিঃ ‘মানুষ’ হওয়ার পথে একটি ধাপ

নকল-নবিশিঃ ‘মানুষ’ হওয়ার পথে একটি ধাপ

Posted on ৯ এপ্রিল, ২০১৯

২৪শে জুলাই, অনলাইন চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট-পত্রিকাতে এমনটাই জানিয়েছেন জানা ক্লে। বারমিংহ্যাম ও ডারহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এই মনস্তাত্বিক বলেনঃ ‘অপরকে নকল করা মানুষের পক্ষে একটি অন্যতম প্রয়োজনীয় দক্ষতা। মানুষ চায় তাকে নকল করা হোক এবং তাদেরকেই আমরা পছন্দ করি যারা আমাদের নকল করে।’ আই ফোন ব্যবহার থেকে হরেক কাজই আমরা শিখি অপরকে নকল করার মাধ্যমে। সম্প্রতি জানা ও তাঁর সহকারী ক্লদিও টেন্নি ৭৭টি মানবশিশু (বয়স ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে) ও ৪৬টি বনোবো (বয়স ২ থেকে ২৯এর মধ্যে)-কে নিয়ে একটি পরীক্ষা চালান। গবেষক দুজন একটি হাতের তালুর সমান বাক্স নিয়ে বনোবো ও মানবশিশুদের সামনে বসেন এবং একটি অর্থহীন হাতের মুদ্রা দেখিয়ে নিজেদের বাক্সটি খোলেন। বাক্সটি খুলতে দেওয়া হলে শিশুরা প্রায় সকলেই গবেষকদের মুদ্রাটি অনুকরণ করে। কিন্তু বনোবোদের কেউই তা করেনি বরং সরাসরি তারা বাক্সটি খুলে ফেলেছিল।

‘এটাই বরং যুক্তিগ্রাহ্য জিনিস’, জানা ক্লে মন্তব্য করেনঃ ‘যা বনোবোরা করেছে। মানুষ কিন্তু এই অর্থহীন মুদ্রাটি অনুকরণ করছে, এটাই প্রমাণ করে তার অনুকরণ করার ক্ষমতা আছে। বিবর্তন এজন্যই এত দ্রুত ঘটেছে, মানুষ এজন্যই এত বৈচিত্র্যময়।’

এই ব্যাপক অনুকরণবৃত্তির নাম দেওয়া হয়েছে ওভারইমিটেশন, গবেষকরা জানান। এই অনুকরণের ফলে সরাসরি ব্যক্তির কোনো লাভ হয় না। ধর্মীয় আচার, সামাজিক প্রথা ও ভাষাগত ক্ষেত্রে এই অনুকরণের দৃষ্টান্ত প্রায়ই দেখা যায়। সমাজ এজন্যেই এত মসৃণভাবে চলতে পারে।

শুধু বনোবো নয়, ওরাংওটাং ও শিপাঞ্জিদের ক্ষেত্রেও পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, ওভারইমিটেশন পদ্ধতি তাদের ক্ষেত্রে কাজ করছে না। অন্য সমস্ত এপ্‌ বা বনমানুষ জাতীয় প্রাণীর থেকে মানুষ আরো অনেক ব্যাপারের মতো এখানেও আলাদা।