ভিডিও গেম খেলা বা অন্য হরেক কাজেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভার্চুয়াল বাস্তবতা বা ভি-আর প্রযুক্তি। বিশেষ হেডসেট-এর সাহায্যে আপনি চলে যে্তে পারেন সম্পূর্ণ অন্য এক জগতে- থ্রিডি ছবির মতোই আপনার চোখ ও কানকে এক আশ্চর্য অভিজ্ঞতার শরিক করে তুলতে পারে ভি-আর । কিন্তু এখানেও রয়েছে বিপদের আভাস।
এই অভ্যাস জন্ম দিচ্ছে একধরণের অসুখ, মোশন সিকনেস-এর। আপনার চোখ ও কান যখন গতিশীলতা অনুভব করছে তখন আপনি নিজে থাকছেন স্থির। এর ফলে ইন্দ্রিয় ও মস্তিষ্কের গৃহীত সংকেতে ঘটে যাচ্ছে হেরফের, যার মাশুল গুনতে হচ্ছে শরীরকে। বমিভাব ও অন্য নানা উপসর্গে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। অরল্যান্ডো-র ডিজাইন ইন্টারঅ্যাক্টিভ কোম্পানির এঞ্জিনিয়ার কে স্ট্যানলি জানিয়েছেনঃ ‘২৫ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ রোজই মোশন সিকনেসে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এই রোগীদের বেশিরভাগই মহিলা।’
ভিডিওগেমের পাশাপাশি যেমন অডি বা জেনারেল মোটরস-এর মতো কোম্পানিগুলি এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে, আর্কিটেক্টরাও ব্যবহার করছেন ভি-আর। ক্রেতাকে না তৈরী হওয়া বাড়ির ব্লুপ্রিন্টের মধ্যে হেঁটে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন তাঁরা। ফেসবুকের সিইও মার্ক জুকারবার্গ জানিয়েছেন, ‘ভি-আর অতিদ্রুতই ফেসবুকের পরবর্তী সোশাল প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে চলেছে।’
ম্যাসাচুসেটস আই অ্যান্ড ইয়ার ভেস্টিবিউলার ডিভিশন-এর অধিকর্তা স্টিভেন রাঞ্চ মন্তব্য করেনঃ ‘আমার ধারণা মোশন সিকনেস অসুখের নিরাময় প্রায় অসম্ভব।’ ভি-আর প্রযুক্তিতে চোখ ও কান পরস্পর বিপরীত সংকেত গ্রহণ করায় মস্তিষ্ক বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে, জানাচ্ছেন তিনি। ১৯৫৭ সালে ইউ-এস মিলিটারি প্রথম এই ভার্চুয়াল মোশন সিকনেসের কথা জানিয়েছিল। একাধিক পাইলট এর ফলে তখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
ব্লু এনকাউণ্টার বা জব সাইমুলেটর-এর মতো গেমের থেকে ক্ষতির সম্ভাবনা যেমন কম তেমনই ডায়নোসর-চেজিং গেম ‘আইল্যান্ড ৩৫৯’ থেকে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনজীবনে নিত্যসঙ্গী হতে গিয়েও ভি-আর থমকে দাঁড়াচ্ছে মূলত এই কারণেই।