নিত্যদিন বাড়িতে বা বাইরে পিঁপড়েদের দেখা মেলে। ছোটো এই প্রাণীটি হাজার বিস্ময়ে ভরা! পিঁপড়েরা কোথায় থাকে? তাদের ঘরবাড়ি কী রকম? পিঁপড়েরাও মানুষের মতোই জোটবদ্ধ প্রাণী। তবে কী মানুষের কোনও আচরণের সঙ্গে পিঁপড়ের আচরণের মিল রয়েছে? মিল খুঁজে পেয়েছেন বিবর্তন নিয়ে কাজ করা কিছু জীববিজ্ঞানী। তারা প্রমাণ করেছেন যে পিঁপড়েরা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে শেখে। ফ্রেইবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু গবেষক পিঁপড়েদের নিয়ে এই গবেষণাটি চালান। তারা দেখেন যে সব পিঁপড়েরা আগে আক্রমণাত্মক কিছু পিঁপড়ের সম্মুখীন হয়েছিল তারা যখন আবার পরবর্তী ক্ষেত্রে সেই বাসার পিঁপড়েদের মুখোমুখি হয়েছে, তখন তারা অন্যান্যদের তুলনায় তাদের প্রতি বেশি আক্রমণাত্মক আচরণ প্রকাশ করেছে। যে বাসার পিঁপড়ে সদস্য আক্রমণাত্মকভাব দেখায়নি তাদের প্রতি পিঁপড়েরাও স্বাভাবিক আচরণ দেখিয়েছে। গবেষণাটি সম্প্রতি কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
পিঁপড়েরা তাদের নিজস্ব বাসার সদস্যদের এবং অন্য বাসার সদস্যদের মধ্যে পার্থক্য করতে গন্ধ ব্যবহার করে। প্রতিটি বাসার নিজস্ব নির্দিষ্ট একটা গন্ধ থাকে। পূর্ববর্তী গবেষণায় ইতিমধ্যেই দেখা গেছে যে পিঁপড়েরা তাদের নিকটতম প্রতিবেশীদের প্রতি আক্রমণাত্মক আচরণ করে। তারা কামড়ে বা অ্যাসিড স্প্রে করে তাদের প্রতিযোগীদের মেরে ফেলে। তবে পিঁপড়েরা তাদের বাসার থেকে আরও দূরে অবস্থিত বাসার পিঁপড়েদের বিরুদ্ধে এই ধরনের আক্রমণাত্মক কৌশল ব্যবহার করে না। এখনও পর্যন্ত, কেন এই ছোটো প্রাণী এমন করে তা স্পষ্ট ছিল না। গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে পিঁপড়েরা আক্রমণকারীদের গন্ধ মনে রাখে। এই কারণেই তারা তাদের পরিচিত বাসার আক্রমণকারী পিঁপড়ে প্রতিযোগীদের মুখোমুখি হলে বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। গবেষকরা জানান বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা ভেবে নেওয়া হয় যে পোকামাকড় অনেকটা পূর্বে প্রোগ্রাম করা রোবটের মতো আচরণ করে। কিন্তু এই গবেষণা প্রমাণ করে যে, পিঁপড়েরাও তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শেখে এবং ক্ষোভ পুষে রাখে ও যথাসময়ে তাদের রাগ উগ্রে দেয়। গবেষকরা জানিয়েছেন পরবর্তীতে, তারা দেখতে চান পিঁপড়েরা তাদের ঘ্রাণশক্তি রিসেপ্টরগুলোকে তাদের অভিজ্ঞতার সাথে কীভাবে এবং কতটা খাপ খাইয়ে নেয়।