পৃথিবী ও মানুষের উন্নতির পথ ক্রমশ কমছে

পৃথিবী ও মানুষের উন্নতির পথ ক্রমশ কমছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
পৃথিবী ও মানুষের উন্নতির পথ ক্রমশ কমছে

ভবিষ্যতে আমাদের গ্রহ সকলের জন্য বাসযোগ্য হবে, যদি বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও প্রযুক্তি আদ্যপান্ত রূপান্তরিত হয়। এর জন্য জরুরি সংস্থানগুলোর ন্যায্য ব্যবহার, পরিচালনা ও বণ্টন প্রয়োজন। UvA-এর জয়িতা গুপ্তার নেতৃত্বে আর্থ কমিশনের ষাটটিরও বেশি নেতৃস্থানীয় ন্যাচারাল ও সোশ্যাল সায়েন্টিস্ট , প্রফেসর জুয়েমেই বাই, প্রফেসর ডায়ানা লিভারম্যান এই রিপোর্টের সহ-লেখক। দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ পত্রিকায় এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। গত বছরে নেচার জার্নালে প্রকাশিত ‘সেফ অ্যান্ড জাস্ট আর্থ সিস্টেম বাউন্ডারিজ’ -এ প্রকাশিত হয়েছিল বিভিন্ন জরুরি ক্ষেত্রের সীমা মানুষ অতিক্রম করে ফেলেছে। বর্তমান পেপারে ‘সেফ অ্যান্ড জাস্ট স্পেস’ শনাক্ত করা হয়েছে যাতে মানুষ ও প্রকৃতির ক্ষতি ন্যূনতম হয়, প্রত্যেকে যাতে সম্পদের ভাগ পায়, আর সেই দিকের দিশা নির্দেশ করা হয়েছে। ২০৫০-এর দিকে তাকালে এমন এক পৃথিবী দেখা যাবে, যেখানে অসাম্যের জন্য এই ‘স্পেস’ বা মানুষের সঙ্কুলান কমছে। এর থেকে মুক্তির জন্য জরুরিভিত্তিতে রূপান্তর প্রয়োজন। পৃথিবীর ক্ষতি না করে সকলের জন্য সরবরাহ বজায় রাখতে, সমাজ, ব্যবসা এবং অর্থনীতির উন্নতি নিশ্চিত করার উপায় হল অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তন করা। তার সাথে গুরুত্বপূর্ণ চাহিদার সংস্থান যেমন পানীয় জল, পুষ্টি সকলের জন্য নিশ্চিত করে বৈষম্য হ্রাস করা।
সম্পদ কমার কারণ, সংখ্যালঘু কিছু মানুষের কাছে সম্পদ কুক্ষিগত ও তারা তা অতিরিক্ত ব্যবহার করছেন। বর্তমানে পৃথিবীর চাপ বাড়ার কারণ এই সংখ্যালঘুদের অতিরিক্ত সম্পদ ব্যবহার। যাদের কাছে বর্তমানে পর্যাপ্ত পরিমাণ সংস্থান নেই তাদের জন্য ন্যূনতম সংস্থান সরবরাহ করলে পৃথিবীর চাপ অনেক কমবে। জয়িতা গুপ্তা বলেন, বৈষম্য পৃথিবীর ক্ষতি করছে। ক্রমবর্ধমান দূষণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের দুর্বল ব্যবস্থাপনা মানুষ ও প্রকৃতির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করছে। যাদের অনেক বেশি সম্পদ আর যাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে সম্পদ নেই তাদের মধ্যে ব্যবধান যতই প্রসারিত হবে, তার পরিণতি সকলের পক্ষে খারাপ হবে। এতে আমাদের জীবনধারা, বাজার, অর্থনীতি ভেঙে পড়তে শুরু করবে। যদি আর্থ সিস্টেমের সীমার পরে আমাদের গ্রহের সিস্টেমগুলো স্থিতিশীল ও স্থিতিস্থাপক না থাকে তবে মানুষ ও প্রকৃতির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা। নিরাপদ ও ন্যূনতম সংস্থান, দারিদ্র্য মুক্ত জীবন যাপনের “ভিত্তি” উপস্থাপন করে।
ন্যূনতম সংস্থানের জন্য তিন জায়গাতে পরিবর্তন প্রয়োজন। প্রথমত অর্থনীতির পলিসি পরিবর্তন – নতুন পলিসি ও বিনিয়োগে অসাম্য দূর করার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে, আর দেখতে হবে প্রকৃতি ও জলবায়ুর ওপর যেন চাপ কমে। দ্বিতীয়ত, সুষ্ঠুভাবে সমাজের প্রতি স্তরে সম্পদ বণ্টন, আর এক শ্রেণির বেশি সম্পদভোগে সীমা বেঁধে দেওয়া। তৃতীয়ত বলা হয়েছে, টেকসই ও সাশ্রয়ী প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা, যাতে আমরা কম সম্পদ ব্যবহার করে সকলের জন্য সংস্থানের সুযোগ দিই।