পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের চাপ কী আমদের পিষে ফেলতে পারে?

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের চাপ কী আমদের পিষে ফেলতে পারে?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

পৃথিবী ঘিরে রয়েছে মাইলের পর মাইল বাতাস। পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬২ মাইল ওপরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল আর মহাকাশের মধ্যে সীমানা কারমান লাইন অবস্থিত। রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানের অধ্যাপক অ্যান্থনি ব্রকোলির মতে, বায়ুমণ্ডলের প্রায় ৩০ মাইল নীচে পৃথিবীর ৯৯.৯% ভর অবস্থিত। বায়ু আমাদের দেহের তুলনায় হালকা হলেও, বায়ুমণ্ডলের এই বিশাল পরিমাণ বাতাসের ওজন অনেক বেশি। ১ ফুট বা ০.৩ মিটার ব্যাসের বাতাসের নলাকার ভর হল ৭৫৪ কিলোগ্রাম। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মোট ভর হল ৫১ কোটি কিলোগ্রাম । তাহলে আমরা কেন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের চাপে পিষ্ট হয়ে যাইনা? কারণ বাতাস আমাদের শরীরের চারপাশে প্রবাহিত হয়। ব্রকোলি বলেন বাতাসের চাপ একজন ব্যক্তির শরীরের সমস্ত অংশে সমানভাবে পড়ে, এটা কেবল নিম্নগামী চাপ দেয় না। তবুও, বায়ুমণ্ডল আমাদের শরীরের উপর সমানভাবে যে চাপ দেয় তা তুচ্ছ নয়। এর পরিমাণ প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে প্রায় ১ কিলোগ্রাম।
নিউইয়র্কের বাফেলো ক্যানিসিয়াস ইউনিভার্সিটির প্রফেসর মাইকেল উড বলেছেন, আমাদের দেহ সময়ের সাথে সাথে চাপ সহ্য করার মতো বিকশিত হয়েছে, তাই আমরা বায়ুচাপের জন্য পিষ্ট হই না। আমাদের দেহের ভিতরের বায়ুও একই চাপ বাইরের দিকে দেয়, উভয় চাপের শক্তি ভারসাম্য রক্ষা করে। উচ্চতায় ওঠার সাথে সাথে বায়ু পাতলা হয়ে যায়, তাই উচ্চতার সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপও হ্রাস পায়। উচ্চতায় বায়ুর চাপ আলাদা হওয়ার জন্য বিমানে আরোহণ আর অবতরণের সময় আমাদের কানে তালা লেগে যায়। মহাকাশে বায়ুর চাপ শূন্য। কিন্তু আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ চাপ থাকে, তাই আমরা স্পেসস্যুট ছাড়া মহাকাশে ভ্রমণ করতে পারি না। মানুষের শরীরের ওপর বায়ুর চাপ না থাকলে, শরীরের আভ্যন্তরীণ চাপ শরীরকে বেলুনের মতো স্ফীত করতে থাকবে যতক্ষণ না চাপ নির্গত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 − three =