উচ্চতায় ৬০ ফুট। প্রস্থে ১৪ ফুট। একটা চুম্বকের পিলার। বৈজ্ঞানিক ভাষায় এর নাম ‘ইন্টারন্যাশনাল থার্মোনিউক্লিয়ার এক্সপেরিমেন্টাল রিঅ্যাক্টর’ বা সংক্ষেপে আইটিইআর। এত ভারি এই চুম্বকের পিলার যে, একটা এয়ারক্রাফট পর্যন্ত সে অনায়াসে তুলে ফেলতে পারে! ফ্রান্স এই চুম্বকের প্রথম অংশ ইতিমধ্যে তৈরি করে ফেলেছে। আর ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউটের প্রযুক্তিবিদ বিজ্ঞানীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই আরও একটি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় তৈরি করছে বিশ্বের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সুপার-কন্ডাক্টিং চুম্বক! যাকে বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘পৃথিবীর বুকে তৈরি হচ্ছে একটা সুর্য!’ বিজ্ঞানীদের মতে এই চুম্বক অন্যান্য ফিশন রিঅ্যাক্টরের মতো কাজ করবে না। যেগুলো বর্জ্য তেজস্ক্রিয় বা মেল্টডাউন তৈরি করে। এই চুম্বক পরিষ্কার ও সতেজ শক্তি উৎপাদন করবে। শক্তির পরিমাণ হবে অপরিসীম। গত প্রায় এক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা এরকম একটি সুপার কন্ডাক্টিং চুম্বক তৈরির চেষ্টা করে চলছেন।
এই চুম্বক অণু ভাঙবে না। বরং মহাকাশের গ্রহদের মতো দু’টো হাইড্রোজেনের অণুকে মিশিয়ে তৈরি করবে একটা হিলিয়ামের অণু আর তার সঙ্গে সীমাহীন শক্তির ভাণ্ডার। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই চুম্বক তৈরির ভবিষ্যৎ উদ্দেশ্য প্রতিনিয়ত আবহাওয়া বদলে যাওয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটা মাধ্যম তৈরি করা।
ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ আর্থিকভাবে এই প্রোজেক্টে অনুদান দিচ্ছে। পুরো অংশটি তৈরি হতে খরচ পড়বে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২ হাজার কোটি টাকা)! ২০৫০-এর মধ্যে এই চুম্বকের সহায়তায় পৃথিবী গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে যাবে বলে আইটিইআরের বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত!