প্রবীণদের খাওয়ার স্মৃতিকাতরতা

প্রবীণদের খাওয়ার স্মৃতিকাতরতা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

অধ্যাপক ক্যারোলিন রস পরিচালিত ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি নতুন গবেষণার লক্ষ্য হল, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের খাবারের প্রতি রুচি বাড়িয়ে অপুষ্টি রোধ করা। খাবার শুধুমাত্র স্বাদু হলেই হবে না, পরিবারের বয়স্ক সদস্যের খাবারে আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপকরণ থাকা প্রয়োজন। চাই স্মৃতিমেদুরতা, স্বস্তি এবং হরেক চেহারার খাবার।
গবেষণা দলটি গড়পড়তা একাত্তর বছর বয়সের ৮১ জন অংশগ্রহণকারীর উপর দুরকম নাস্তা ও দুরকম মিষ্টান্ন সহযোগে পরীক্ষা চালান । তারপর খাবার এবং ব্যক্তিগত খাওয়ার অভ্যাস সম্পর্কে একগুচ্ছ প্রশ্ন করেন। বিজ্ঞানী রস বলেছেন, “খাবার-সম্পর্কিত স্মৃতিকাতরতা বা নস্টালজিয়া পরিমাপ করা কঠিন।” তবে দেখা গেছে , খাবার পছন্দের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক স্মৃতিকাতরতা। খাবার নিয়ে অংশগ্রহণকারীরা কী ভাবেন? উত্তরে উঠে আসে, ঠাকুমা দিদিমার হাতে তৈরি মন্ডা মিঠাই । এমনকি চড়ুইভাতিতে ঝলসানো মাংস বা বারবিকিউও স্মৃতিমেদুর খাবার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
কৃষ্টিভেদে এই পছন্দ ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে। এই গবেষণায়, ‘ চিজ ‘ আরামদায়ক খাবারের উপাদান হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। খাবারে, পর্যাপ্ত চিজের স্বাদ না থাকলে, খাবারের স্বস্তির মাত্রা কমে গেছে বলে অংশগ্রহণকারীরা জানান। ভবিষ্যৎ গবেষণা কোন কোন খাবার স্বস্তি বাড়ায় তাদের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলির খোঁজ করবে। খাবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হল চেহারার বৈচিত্র্য। পরীক্ষায় একদিকে কড়কড়ে শক্ত চেহারার, অন্যদিকে নরম এবং মিহি চেহারার খাবার রাখা হয়েছিল । “তবে যারা তরুণ বয়সের মতো শক্ত কড়কড়ে খাবার খেতে পারেন না, তাদের ক্ষেত্রেও যতটা সম্ভব চেহারার বৈচিত্র্য বজায় রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ” বলে রস জানান। জনসমষ্টিতে প্রবীণদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা, এই গবেষণাকে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে । খাদ্যবিজ্ঞানে, খাবার সম্পর্কিত স্মৃতিকাতরতার বিশ্লেষণ অপেক্ষাকৃত নতুন। এই গবেষণার ফলাফল, খাদ্য উৎপাদনকারীদের বয়স্কদের জন্য আরও আকর্ষণীয় ও পুষ্টিকর খাবার তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 2 =