বজ্রপাতে এত উচ্চ প্রবাহযুক্ত বিদ্যুৎ কীভাবে সৃষ্টি হয়

বজ্রপাতে এত উচ্চ প্রবাহযুক্ত বিদ্যুৎ কীভাবে সৃষ্টি হয়

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ৭ অক্টোবর, ২০২৩

আকাশে বিদ্যুৎ চমকানোর মধ্যে বিরল, প্রায় এর ১ শতাংশেরও কম হল শক্তিশালী বজ্রপাত বা সুপারবোল্ট। এখন একটি নতুন গবেষণায় প্রকাশ করা হয়েছে যে কেন এই ভয়ঙ্কর ভোল্টেজের ঝাঁকুনি নিয়মিত বিদ্যুতের চেয়ে হাজার গুণ বেশি শক্তি ধারণ করতে পারে। ইসরায়েলের হিব্রু ইউনিভার্সিটি অফ জেরুজালেম এবং ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা রেডিও সেন্সরের ওয়ার্ল্ড ওয়াইড লাইটনিং লোকেশন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ২০১০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী বজ্রপাতের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।
তাদের দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল, একটি ঝড়ের মেঘের বৈদ্যুতিক চার্জিং জোন ভূমি বা সমুদ্রের পৃষ্ঠের যত কাছাকাছি হবে, শক্তিশালী বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। মেঘের উপরের অংশ যেখানে বিদ্যুতায়ন ঘটে, সেটাই হল চার্জিং জোন। ফলাফলগুলি পূর্ববর্তী গবেষণার সাথে সাযুজ্যপূর্ণ যেখানে উত্তর-পূর্ব আটলান্টিক মহাসাগর, ভূমধ্যসাগর, এবং পেরু এবং বলিভিয়ার আলটিপ্লানো মালভূমিতে এমন স্থান হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল যেখানে প্রায়শই এই ধরনের শক্তিশালী বজ্রপাতের রেকর্ড পাওয়া যায়। গবেষণায় বলা হচ্ছে এই সমস্ত অঞ্চলে চার্জিং জোন এবং এখানকার শীতল মহাসাগর বা উচ্চ উচ্চতার পর্বত পৃষ্ঠের মধ্যে স্বল্প দূরত্ব রয়েছে। এখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যেখানে বাতাসের তাপমাত্রা ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তার ওপরের স্তরে চার্জিং জোন উত্পন্ন হয়। সাগরের উপর ঠাণ্ডা বাতাস ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি স্তরে ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিয়ে আসে এবং উচ্চ উচ্চতার পর্বত বায়ুকে উপরে উঠতে বাধ্য করে, যা এটিকে শীতল করে এবং ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস স্তরকে পৃষ্ঠের কাছাকাছি নিয়ে আসে। গবেষণায় বলা হচ্ছে ছোটো দূরত্ব মানে কম বৈদ্যুতিক প্রতিরোধ, এবং সেইজন্য একটি তীব্র শক্তিশালী উচ্চ প্রবাহের বজ্রপাত সৃষ্টি হওয়া।
এই শক্তিশালী ব্জ্রপাত আঘাত হানলে বাড়ি ঘর এবং সমুদ্রে জাহাজগুলির গুরুতর ক্ষতি করতে পারে। সুপারচার্জড বজ্রপাত কোথায় আঘাত হানতে পারে এই নতুন অনুসন্ধান তা শনাক্ত করতে সাহায্য করবে। এখানে আরও একটি সমস্যা প্রাসঙ্গিক তা হল জলবায়ু পরিবর্তন। গবেষকরা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীদের কাজ করতে হবে যে উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে কম বা বেশি বজ্রপাতের সম্পর্ক আছে কিনা এবং তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা এক্ষেত্রে কী ভূমিকা নেয়। গবেষণাটি জার্নাল অফ জিয়োফিসিক্যাল রিসার্চ অ্যাটমোস্ফিয়ারস – এ প্রকাশিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × two =