গ্লাসগোয় চলতি মাসেই বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে পৃথিবীর দেশগুলো আলোচনায় বসছে। সেখানে উষ্ণায়নের জন্য পৃথিবীতে চলতে থাকা চরম ঘটনাগুলো নিয়েও আলোচনা হবে। সাম্প্রতিকতম চরম ঘটনাটি নিয়েও নিশ্চয়ই আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিকতম চরম ঘটনা মানে, পৃথিবীর মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়া নয়। সে তো অনেক বছর ধরেই হচ্ছে। কিন্তু নতুন গবেষণা যে অস্বস্তির খবর দিল তা হচ্ছে বরফ গলে যাওয়ার জন্য পৃথিবীর আকার ও আয়তনও বদলে যাচ্ছে! গবেষকরা বলছেন, অ্যান্টার্কটিকা, আর্কটিক অঞ্চল, গ্রীনল্যান্ডের বিশাল অঞ্চল জুড়ে বহু বছর ধরে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য যে বিশাল পরিমাণে বরফের বিশাল বিশাল চাঁইগুলো গলে সমুদ্রে মিশছে তাতে শুধু সি-লেভেল বা সমুদ্র তলই উঠছে না, সূক্ষ্মভাবে, নিঃশব্দে পৃথিবীর আকারেরও পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে! জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা। বলা হয়েছে, বিশাল বিশাল বরফের চাঁই সমুদ্রের জলে পড়ার পর পৃথিবীর ত্বকও ভাঙতে থাকে। আর তাতেই ধীরে ধীরে বদলে যায় পৃথিবীর আকার। সংখ্যাতত্বে এই পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজ্ঞানীরা বলছেন, আকার পরিবর্তনটা বছরের হিসেবে, কয়েক মিলিয়ন মিলিমিটারের এক মিলিমিটারের দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগ! তবে এর কোনও নির্দিষ্টতা নেই। প্রত্যেক বছরই ভূত্বক ভাঙনের পরিমাণ বদলায় আর পৃথিবীর আকার বদলের ছবিটাও প্রত্যেক বছর বদলায়।
ভূতত্ববিদরা বলেন, পৃথিবীর ওপর থেকে ৪০ কিলোমিটার গভীরে বিস্তৃত এই ভূত্বক। ভূত্বক মূলত তৈরি হয় পাথর আর নানা রকমের খনিজদ্রব্যের মিশ্রণে।
ভূত্বকের নিঃশব্দ ভাঙনে পৃথিবীর কতটা ক্ষতি? ভূতত্ববিদরা বলে দিয়েছেন, বিশেষ কিছুই নয়, ভূমিকম্পের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে, সুনামিও ঘনঘন হতে পারে! গ্লাসগো সম্মেলনে পৃথিবীর রাষ্ট্রনেতারা কি বিচলিত হবেন আদৌ? রাষ্ট্রনেতাদের বেঁচে থাকার দর্শনটা অবশ্য অন্যরকম, ‘যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ’!