বার্ধক্যজনিত কারণে পেশির ক্ষয়

বার্ধক্যজনিত কারণে পেশির ক্ষয়

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে দেখা দেয় বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা। স্নায়ু ও পেশির কার্যক্ষমতা কমে আসে। সারকোপেনিয়া হল বয়সজনিত কারণে শরীরের পেশির ভর বা পেশি শক্তির হ্রাস পাওয়া যার ফলে হাঁটাচলার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, পড়ে যান অনেক প্রবীণ মানুষ। বেশি বয়সে আচমকা ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়া এক মারাত্মক বিপদ। আচমকা পতন ও তার ফলে মৃত্যু ঘটাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘ফ্যাটাল ফল’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, আচমকা পড়ে যাওয়ার ফলে প্রতি বছর বিশ্বে ৪ কোটির কাছাকাছি গুরুতর চোট পান ও হাসপাতালে ভর্তি হন। যাঁরা এ ভাবে আহত হন, তাঁদের বেশিরভাগই ৬৫ উত্তীর্ণ। সুতরাং এই বিষয়ের উপর গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ যা বয়স্ক মানুষদের সুস্থ এবং স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার সুবিধা প্রদান করবে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় গবেষকরা প্রকাশ করেছেন যে TP53INP2 নামক একটি প্রোটিন সারকোপেনিয়া মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। জানা গেছে যে পেশিতে এই প্রোটিনের বর্ধিত মাত্রা মানুষের পেশি শক্তি এবং স্বাস্থ্যকর বার্ধক্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত। সাধারণত ৫৫ বছর বয়স থেকেই শরীরের পেশির ভর হ্রাস পেতে শুরু করে এবং মানুষের দৈনন্দিন কাজ করার ক্ষমতা এবং তাদের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। ফলত এই সব মানুষদের দীর্ঘমেয়াদী যত্নের প্রয়োজন হয়। ইঁদুরের উপর পরীক্ষা এবং মানুষের পেশি কলার নমুনা বিশ্লেষণ করে, গবেষকরা দেখেন বয়সের সাথে TP53INP2 প্রোটিনের স্তর হ্রাস পায়। অল্পবয়সী ইঁদুর বা প্রাপ্তবয়স্ক ইঁদুরের পেশিতে কৃত্রিমভাবে এই প্রোটিনের উপস্থিতি বৃদ্ধি, পেশির ভর এবং কার্যকারিতা উভয় ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটায়। এই ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে TP53INP2-এর কার্যকলাপের বৃদ্ধি এবং ফলস্বরূপ, পেশিতে অটোফ্যাজি, সারকোপেনিয়া মোকাবেলা করার একটি কার্যকর কৌশল হতে পারে, যার ফলে আরও সক্রিয় এবং স্বাস্থ্যকর বার্ধক্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়। মানুষের উপর করা পরীক্ষায় দেখা গেছে উচ্চ মাত্রায় TP53INP2 পেশি শক্তি এবং শারীরিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যার ফলে এই প্রোটিন স্বাস্থ্যকর বার্ধক্যের সূচক হিসাবে গণ্য হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 + twelve =