বাস্তবের মুখ দেখছে অন্ধত্বের জেনেটিক চিকিৎসা

বাস্তবের মুখ দেখছে অন্ধত্বের জেনেটিক চিকিৎসা

Posted on ৯ এপ্রিল, ২০১৯

বংশগত রেটিনার অসুখে যেসব রোগীরা দৃষ্টি হারিয়েছেন তাঁরা দেখতে সক্ষম হবেন একটি নতুন জিন থেরাপির মাধ্যমে। চলতি বছর ২০১৭ সালের গবেষণায় উঠে এল এমনই সিদ্ধান্ত।

বংশগত সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের অবস্থাটিকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় লেবের কনজেনিটাল অ্যামাউরোসিস (এল-সি-এ)। ছোটোবেলা থেকে এই ‘অসুখ’টি শুরু হয় এবং এর পরিণতি সম্পূর্ণ অন্ধত্ব। এর কোনো চিকিৎসাও এতদিন ছিল না। আবিষ্কৃত নতুন জিন থেরাপিটি তাই খতিয়ে দেখছে ইউ-এস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ।

এই প্রকল্পের একটি প্রধান দায়িত্বে ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব আইওয়া-র এম ডি অপথ্যালমোলজিস্ট স্টিফেন রাসেল । প্রকল্পের তৃতীয় দফার সমীক্ষা জানিয়েছে, ২৯ জন রোগীর মধ্যে ২৭ জন (অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ) –এর ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটেছে। আলোর উপস্থিতিতে তাদের চোখ সংবেদী হয়ে উঠছে, এতদিন যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের আয়ত্তে ছিল না।

অন্যান্য জিন থেরাপির ক্ষেত্রেও একটি দিগন্ত খুলে গেল, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্ধত্বের জন্য দায়ী ২২৫-এরও বেশি জেনেটিক মিউটেশন এই পদ্ধতির দ্বারা নিরাময় করা যাবে। রেটীনিটিস পিগমেন্টোসা- আরেকটি বংশগত রেটিনার সমস্যার পেছনে রয়েছে একটি অস্বাভাবিক জিন। এটির চিকিৎসাও করা যাবে নতুন পদ্ধতির সাহায্যে- আশা করছেন গবেষকরা।

এল-সি-এ রোগটি বিরল, আশিহাজার জনে একজনের হয়ে থাকে। এই রোগের চিকিৎসা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে ‘ভোরটিজিন নেপারভোভেক’ নামের পদ্ধতি। একটি ক্ষতিহীন ভাইরাসের সাহায্যে চোখের রেটিনায় জিন সংস্থাপন করা হবে যা দৃষ্টি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। বিলিয়নেরও বেশি সংখ্যক ভাইরাস এজন্য রোগীর চোখে ইনজেক্ট করবেন চিকিৎসক। যদিও স্বাভাবিক দৃষ্টি এর ফলে ফিরে আসবে না, কিন্তু রোগীকে আকার ও আলো দেখতে সাহায্য করবে, ছড়ি বা কুকুরের সাহায্য ছাড়াই রোগীকে হাঁটতে সমর্থ করে তুলবে। কতদিন এই চিকিৎসার ফলাফল ভোগ করবেন রোগীরা, তা নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা কাটেনি। অন্তত দুবছরের জন্য নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন রোগীরা, আশা করছেন চিকিৎসকরা।